মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ওমর (রা.)-এর মূলনীতি

হজরত ওমর ফারুক (রা.)-এর মূলনীতি ছিল মানুষের সেবা, যার ফলে তাঁর আমলে জাতিধর্ম-নির্বিশেষে সবাই সুখে শান্তিতে বাস করত। তিনি এমন একটি আদর্শ ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করে যান, যার মূলে ছিল শান্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব। এক কথায় বিশ্বমানবের সেবা। হজরত ওমর (রা.)-এর প্রতিষ্ঠিত মজলিসে শূরা বা পরামর্শ পরিষদ আজও বিশ্ব গণতন্ত্রের জয়গান করছে। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, ‘পরামর্শ ছাড়া কোনো খেলাফত চলতে পারে না।’ তাঁর মতে, গণতন্ত্র ছাড়া কোনো রাজ্য চলা উচিত নয়। তিনি স্বৈরতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রকে অন্তরের সঙ্গে ঘৃণা করতেন। রাস্তার সামান্য দীনতিদীন ভিখারিকে তিনি ভোটের সুযোগ দিয়েছিলেন। অতি সামান্য একজন মহিলারও প্রকাশ্যে সমালোচনার অধিকার ছিল। হজরত ওমর (রা.) ছিলেন গণতন্ত্রের এমন একজন ধারক ও বাহক, যা পৃথিবী আজও জম্ম  দিতে পারেনি।

ক্ষমতার প্রতি তাঁর কোনো লোভ ছিল না। তাই তিনি সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থার জন্য কেন্দ্র থেকে গ্রামান্তর পর্যন্ত ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করেছিলেন। তাঁর শাসনব্যবস্থা সুশৃঙ্খলিত শিকলের মতো যোগাযোগ রক্ষাকারী ছিল। বিশাল সাম্রজ্য স্থাপনের পর বিশ্বের বুকে তিনিই প্রথম অনুভব করেছিলেন যে, নিখুঁত ও ন্যায়বিচার পেতে হলে বিচার বিভাগকে সাধারণ প্রশাসন থেকে পৃথক করতে হবে। তিনি বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ থেকে পৃথক করেছিলেন। বিচার বিভাগ পৃথক্‌করণে তাঁকেই পথিকৃৎ বলা যায়। সরকারি কোষাগার স্থাপন হজরত ওমর (রা.)-এর অক্ষয় কীর্তি। সাম্রাজ্য বিস্তার লাভের সঙ্গে সঙ্গে আয়ও বৃদ্ধি পেতে থাকলে তিনি বায়তুলমাল বা সরকারি কোষাগার স্থাপন করেন। জনসাধারণই ছিল এর প্রকৃত মালিক। পরবর্তীকালে উমাইয়া খলিফা মুয়াবিয়া (রা.) এটি ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেন।

                শাকিলা জাহান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর