বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মোদি কি রামরাজত্ব কায়েম করতে পারবেন?

সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত

মোদি কি রামরাজত্ব কায়েম করতে পারবেন?

সাড়ে চার বছর আগে জনগণের কল্যাণ নয়, তিনটি বিশেষ কর্মসূচি নিয়ে বিজেপি আরএসএস ভারতবর্ষে ক্ষমতায় এসেছিল। এ তিনটি কর্মসূচি হলো ক. অভিন্ন দেওয়ানি বিধি খ. কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং গ. অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ। এর মধ্যে ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তারা প্রায় সফল। খ কর্মসূচি বাস্তবায়নে তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর গ অর্থাৎ তৃতীয় কর্মসূচি রামমন্দির নির্মাণ শুরু করার পথে। ২৬ বছর আগে বাবরি মসজিদ ভেঙে হিন্দুত্ববাদের সুড়সুড়ি দিয়ে গেরুয়াবাহিনী তাদের প্রথম পদক্ষেপ শুরু করে। এ ২৬ বছর আটকে ছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। মন্দিরের জমিসংক্রান্ত বিবাদ নিয়ে সম্প্রতি ভারতের শীর্ষ আদালত ২-১ বিচারপতির রায় স্পষ্ট করে দিয়েছে মসজিদ ইসলামে অপরিহার্য কিনা তা নিয়ে ফের চুলচেরা বিচার হবে না। শীর্ষ আদালতের ২-১ বেঞ্চে তাদের রায় এ বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো খারিজ করে দেয়।

রামমন্দির ঘিরে ২০১৯-এর ভোটে যতই মেরুকরণের সম্ভাবনা থাকুক না কেন একে নিছক জমি বিবাদের মামলা হিসেবেই দেখতে হবে। এ কথা শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে। ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিত্রের তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে অযোধ্যার জমি বিবাদ নিয়ে ২৯ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন শুনানি হবে। বিজেপি, আরএসএস, বিশ্বহিন্দু পরিষদসহ হিন্দুত্ববাদের ধ্বজাধারীরা তিড়িংবিড়িং করে লাফিয়ে উঠেছে এবং সারা দেশকে কাঁপিয়ে তুলেছে তাদের বক্তব্য রামমন্দির বানানোর পথে আর কোনো বাধা থাকল না। ভারতের শীর্ষ আদালতের এ রায় বেরোনোর পরই গেরুয়া পোশাকধারী আরএসএস নেতারা জাতীয় টিভি চ্যানেলগুলোয় উল্লাস প্রকাশ করেছেন। এর সঙ্গে আছেন সংবিধানের নামে শপথ নেওয়া গেরুয়া পোশাক পরা উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথও।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ৪০০ বছরের পুরনো বাবরি মসজিদটি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য একটি মামলা এখনো শীর্ষ আদালতে ঝুলছে। এ মামলার আসামি লালকৃষ্ণ আদভানি, গেরুয়াধারী সন্ন্যাসিনী উমা ভারতী, মুরলী মনোহর যোশী, বিনয় কাটিয়া ও কল্যাণ সিং। কল্যাণ সিং তখন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজস্থানের রাজ্যপাল। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের স্বপক্ষে ইসমাইল ফারুকি মামলায় ১৯৯৪-তে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, সরকার মন্দির, মসজিদ, গির্জা, সবই অধিগ্রহণ করতে পারে। যদি না সংশ্লি­ষ্ট ধর্মে তার আলাদা কোনো তাৎপর্য থাকে। মসজিদ ইসলামের অপরিহার্য অংশ নয়, কারণ নামাজ আদায় করা যায় যে কোনো জায়গায়। দীপক মিশ্র রাম জš§ভূমি বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জমির ভবিষ্যৎ ঠিক করতে বসা বিচারপতি বেঞ্চের সামনে দাবি ওঠে ১৯৯৪ সালের এ রায়ের বিবেচনা করা হোক। কারণ ইসলামে মসজিদ আবশ্যিক না হলে অযোধ্যার জমিতে মুসলমানদের দাবি নস্যাৎ করে দেওয়া হতে পারে। তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি এস আবদুল নাজিরের মতে মসজিদ ইসলামের আবশ্যিক কিনা, মুসলিমদের বিশ্বাস ও ধর্মাচরণ খতিয়ে দেখে সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচার হোক। বছর আটেক আগে এলাহাবাদ হাই কোর্ট রায় দিয়েছিল অযোধ্যার বিতর্কিত জমির দুই ভাগ দেওয়া হোক হিন্দুদের আর এক ভাগ দেওয়া হোক মুসলিমদের। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আরও একটি মামলা হয়।

২৬ বছর আগে ৬ ডিসেম্বর ৪০০ বছরের পুরনো মসজিদ ভাঙাই ছিল বিজেপির রাজনীতিতে উঠে আসার সুপরিকল্পিত একটি জঘন্যতম পরিকল্পনা। এর ফল কী হয়েছিল তা আজও মনে আছে। সারা ভারতবর্ষে হিন্দু মুসলমানদের ভয়ঙ্কর দাঙ্গা, আর হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছিল। একমাত্র বোম্বে শহরেই ২ হাজারের বেশি মারা যায়। যার নায়ক দাউদ ইবরাহিম, যে এখন পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার কিছু অংশ ছাড়া কোথাও বিশেষ দাঙ্গা হয়নি। তার অন্যতম কারণ জ্যোতি বাবু কঠোর হাতে দাঙ্গা দমন করেছিলেন। সঙ্গে পেয়েছিলেন তার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু মালদার গণি খান চৌধুরীকে। জ্যোতিবাবুর ব্যবস্থাপনায় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত উত্তর-চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, দিনাজপুর এসব জায়গায় কোনো দাঙ্গা হয়নি। জ্যোতিবাবু তার বন্ধুকে নিয়ে একটি খোলা গাড়িতে মাইক লাগিয়ে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে শোভাযাত্রা-সহকারে দাঙ্গাবিরোধী বক্তব্য দিতে দিতে রাত ১২টার সময় তার কনভয়সহ মালদা পৌঁছান। সেই কনভয়ে আমিও ছিলাম। তখন সময় রাত ১২টা। বরকত সাহেব মালদা শহরে পৌঁছালেন। সেখানে ২৫-৩০ হাজার সংখ্যালঘু অপেক্ষা করছিলেন। আমার মনে আছে তখন মালদায় টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছিল। বরকত সাহেব তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘পয়সা খরচা করে তোমাদের নামাজ আদায় করার জন্য অযোধ্যায় যাওয়ার দরকার নেই, তোমরা বাড়ি ফিরে যাও আর কাল সকালে আমার সঙ্গে আদিনা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করবে। আদিনা মসজিদ আমার পূর্বপুরুষ করে গেছেন।’ তার এ বক্তব্য শুনে ম্যাজিকের মতো কাজ হলো, সবাই যে যার বাড়ি ফিরে গেলেন। পরদিন সকালে বরকত সাহেব তাদের নিয়ে আদিনা মসজিদে গেলেন। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলোয় বরকতের উপস্থিতি ম্যাজিকের মতো কাজ করেছিল। জ্যোতিবাবু তাকে মালদায় ফোন করে বললেন, ‘আমি জানতাম তুমি পারবে আর তুমি পেরেছ।’ জ্যোতিবাবু বরকত সাহেবকে আরও বললেন, ‘তুমি মালদা ছেড়ে কলকাতা বা দিল্লিতে যাবে না।’ এটাই ছিল তদানীন্তন পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য।

তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের পি ভি নরসিমা রাও। বিজেপিওয়ালারা মসজিদ ভাঙতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এ রিপোর্ট পেয়ে নরসিমা রাও লালকৃষ্ণ আদভানি ও অটল বিহারি বাজপেয়িকে ডেকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। রাও তাদের সরাসরি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আপনারা কি মসজিদ ভাঙবেন?’ আদভানি বলেছিলেন, ‘করসেবকরা পুজো করে চলে যাবেন।’ নরসিমা রাও বলেছিলেন, ‘দেখবেন যেন কোনো অঘটন না ঘটে।’ নরসিমা রাও তাদের আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারেননি। তিনি ফোন করে জ্যোতিবাবুকে ডেকে পাঠান এবং বলেন, ‘আপনি একবার গিয়ে আদভানিকে বোঝান।’ জ্যোতিবাবু কলকাতা ফিরে এসে সাংবাদিকদের কাছে সব ঘটনা খোলাখুলি বলেছিলেন। তিনি কী বলেছিলেন তা একবার দেখা যাক। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আদভানির বাড়িতে গেলাম, আমাকে অনেক খাবার দিল, চা দিল, আমি খেতে পারছি না, কারণ আমি ওই বর্বরদের বিশ্বাস করি না। (জ্যোতিবাবু বিজেপি ও আরএসএসকে বর্বর বলে সম্বোধন করতেন।) আমি মিস্টার আদভানিকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি তো রামায়ণ-টামায়ণ পড়েছি, মিস্টার রাম যে ওখানে জম্মে ছেন তা আপনি কী করে জানলেন? কোনো ইতিহাসে তো পাইনি আমরা। আমি আদভানিকে আরও বললাম, অযোধ্যার যেখানে মসজিদ সেখানেই রাম জম্মে ছেন এরকম প্রমাণ আপনার কাছে আছে? আমার প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে বললেন, এটা তাদের “ভাওনা”। আমি ওই লোকটাকে ওই বর্বরদের একজনকে বললাম ভারতের মানুষ আপনাদের এই ধর্মান্ধতাকে মেনে নেবে না।’

এই পরিস্থিতিতে জ্যোতিবাবু দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে এসে পুলিশকে সতর্ক করে দেন এবং দাঙ্গা দেখলেই কড়া হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমার মনে আছে দক্ষিণ কলকাতাসহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে কোথাও দাঙ্গা বাধাতে দেওয়া হয়নি। জ্যোতিবাবু টিভি চ্যানেলে বলেছিলেন, মন্দির-মসজিদে কেউ হাঙ্গামা করলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের গুলি করে মারা হবে। তার এ নির্দেশে কাজ হয়েছিল। সেই ৬ ডিসেম্বরের পর থেকে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের শুরু। আর এর জম্ম দাতা পাকিস্তান ও আমেরিকা, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মহলের কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, বাংলাদেশের জামায়াত যেমন পাকিস্তানের পোষ্যপুত্র তেমন ভারতের আরএসএস ও গৈরিক বাহিনীর বহু নেতাই আমেরিকার পৃষ্ঠপোষক!

এবার একটু অযোধ্যা ও রামের জম্মে র কিছু তথ্য তুলে ধরা যাক। অযোধ্যার রাজা দশরথের প্রথম স্ত্রী কৌশল্যার পুত্র রাম রামায়ণ অনুযায়ী। রাজা দশরথ চেয়েছিলেন প্রথম সন্তানকে রাজপদে অভিষিক্ত করতে, কিন্তু বাদ সেধেছিল তার দ্বিতীয় স্ত্রী কৈকেয়ী। ষড়যন্ত্র করে দ্বিতীয় স্ত্রী কৈকেয়ী রামকে ১৪ বছরের জন্য বনবাসে পাঠালেন আর কৈকেয়ীপুত্র ভরতকে অযোধ্যার সিংহাসনে বসালেন। বনবাসে থাকাকালে রামের স্ত্রী সীতাকে লঙ্কাধিপতি রাবণ হরণ করে নিয়ে যান। এজন্য রামের সঙ্গে রাবণের যুদ্ধ হয়। সীতাকে ফিরিয়ে আনা হয়। ছোট ভাই ভরত দাদার হাতে সিংহাসন ছেড়ে দেন। কিছুদিন রাজত্ব করার পরই স্ত্রী সীতার প্রতি রামের অবিশ্বাস জম্মাায় এবং তিনি সীতাকে পরিত্যাগ করেন। বনের মধ্যে তার দুই পুত্র জম্ম  হয়। তাদের নাম রাখা হয়েছিল লব ও কুশ। কোনো কোনো ইতিহাসবিদ মনে করেন লবের নামে হয় লাহোর আর কুশের নামে হয় কাশ্মীর। এসব তথ্য ইতিহাসবিদরা কোন সূত্র থেকে পেয়েছেন তা অবশ্য তারা ব্যাখ্যা করেননি। অযোধ্যায় পুরাতত্ত্ববিদরা ৩০০ ফুট মাটি কেটে তল্লাশি চালিয়েও সেখানে কোনো বাড়িঘরের চিহ্ন পাননি। অথচ গেরুয়াদের দৃঢ় বিশ্বাস রাম এখানেই জম্মে  ছিলেন। যে কথা জ্যোতিবসু আদভানিকে বলেছিলেন সেটাই এখন ভারতের আনাচে-কানাচে ঘুরপাক খাচ্ছে।

মোদি রাজত্বের শেষ পর্যায়ে এসে ভারতের নতুন প্রজম্মে র ভোটারসহ প্রায় ১০০ কোটি ভোটার যখন হিসাব-নিকাশ করতে শুরু করেছেন তখন শীর্ষ আদালতের এ রায়কে হাতিয়ার করে গেরুয়াবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ভোটের জন্য আরএসএস কোথায় নামতে পারে এবং মানুষকে কতটা বিভ্রান্ত করতে পারে সে বিষয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আমার আছে। কারণ হিন্দি বলয়ে আমি একাধিক নির্বাচন কভার করেছি।

ভারতের রামায়ণ, মহাভারত, গীতা, বেদসহ যারা সব ধর্মগ্রন্থ নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন এবং করছেন তারা মনে করেন ভারতবর্ষের প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ধর্মের একটা স্থান ছিল যা এখনো আছে। যেমন হিন্দুধর্মের তীর্থস্থান বলতে কাশী, বেনারস, মথুরা, বৃন্দাবন, কুরুক্ষেত্রকে বোঝায়। আর বেশির ভাগ মুসলমানই বসবাস করতেন অযোধ্যায়। প্রবীণ শিক্ষাবিদরা উপহাস করে বলেন, ১৪ বছর স্বামীর সঙ্গে বনবাসের জীবন কাটিয়ে আসার পর শুধু সন্দেহের বশে রামচন্দ্র স্ত্রী সীতাকে পরিত্যাগ করলেন! তারা আরও উপহাস করেন যে রামের যোগ্য শিষ্য মোদি। দুজনের ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য আছে। কারণ মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে দুবার বিধানসভার নির্বাচনে যে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন সেখানে তিনি যে বিবাহিত তা উল্লেখ করেননি। প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি বিবাহিত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পদলাভের পর তিনি তার স্ত্রীকে দিল্লিতে আনেননি। তিনি এতটাই প্রতিহিংসাপরায়ণ যে, তার স্ত্রী স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর অবসরকালীন পাওয়া অর্থ দিয়ে বিদেশ ভ্রমণের জন্য পাসপোর্টে দরখাস্ত করেছিলেন। কিন্তু মোদির নির্দেশে তার পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়; যা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে করার কোনো অধিকার নেই। এ নিয়ে গুজরাটের মহিলা মহল মোদির বিরুদ্ধে খেপে উঠেছিল।

২৯ অক্টোবর অযোধ্যার পরবর্তী মামলার শুনানি। আইনজ্ঞ মহল মনে করেন যে, প্রতিদিন শুনানি করে নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের গোড়ায় চূড়ান্ত রায় ভারতের জনসম্মুখে আসবে। এ আশাতেই ভারতের গেরুয়াবাহিনী ধরে নিয়েছে রামমন্দিরকে সামনে রেখে দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতের মসনদে বসবে। তাই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে গেরুয়াবাহিনী। শুধু ধর্মীয় উসকানি দিয়ে তারা আবার ক্ষমতায় ফিরবে। তাদের আশা কতটা সফল হবে তা আগামী বছর মে মাসে জানা যাবে। তবে তারা যে মন দিয়ে মন্দির নির্মাণের কাজ করেছেন তার প্রমাণ রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা ইতিমধ্যে অযোধ্যায় মন্দির গড়ার জন্য ইট, পাথর, বালি, চুন, সুরকি অর্থাৎ ইমরাত বানাতে যা যা লাগে তা তারা জোগাড় করে ফেলেছেন। মোদি সরকার ও গেরুয়াবাহিনী ভারতবর্ষে সত্যি কি রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারবে?

লেখক : প্রবীণ ভারতীয় সাংবাাদিক

সর্বশেষ খবর