বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঋণখেলাপির তালিকা

অর্থ মন্ত্রণালয়কে কঠোর হতে হবে

ঋণখেলাপিদের প্রতি কোনো ব্যাংকের দরদ থাকার কথা না থাকলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সে উদাহরণই রাখছে। বড় ঋণখেলাপিদের হালনাগাদ তালিকা শাখায় শাখায় দৃশ্যমান স্থানে টানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। সে নির্দেশ মানার কোনো গরজই তারা দেখাচ্ছে না। এমনকি ব্যাংকগুলোয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যে ২৭ দফা সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল তা মানার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। বলা হয়েছিল, নির্দেশনাগুলো কার্যকর করে তিন মাস পরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। এ বিষয়টিও না মানার নজির রেখেছে তারা। এ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ থেকে তিন দফা তাগিদপত্র পাঠানো হলেও কাজ হয়নি। রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংক অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠালেও ঋণখেলাপিদের তালিকা টানানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। স্মর্তব্য, গত বছর ব্যাংকিং বিভাগের এক কর্মশালা থেকে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে ২৭টি সুপারিশ অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বাস্তবায়নের জন্য পাঠানো হয়। এর অন্যতম সুপারিশ ছিল বড় ঋণখেলাপিদের হালনাগাদ তালিকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংকের ওয়েবসাইট, নোটিস বোর্ড বা অনুরূপ দৃশ্যমান স্থানে প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ। খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংকিং খাতের অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। ব্যাংকে আমানত হিসেবে গ্রাহকদের যে অর্থ জমা রয়েছে তার নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। খেলাপি ঋণের জন্য ব্যাংক কর্মকর্তা ও পরিচালকদের দায়ও কম নয়। তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে শত শত কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ করে প্রদত্ত ঋণের একটি অংশ উৎকোচ হিসেবে পেয়েছেন এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। ফলে ঋণখেলাপিদের প্রতি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দরদ সহজেই অনুমেয়। এ দরদের কারণেই ঋণখেলাপিদের তালিকা ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও দৃশ্যমান স্থানে টাঙানোর ক্ষেত্রে গড়িমসি চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নমনীয়তাও এজন্য অংশত দায়ী বললেও অত্যুক্তি হবে না। কারণ তারা তালিকা টাঙানোর এবং তিন মাস অন্তর অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠানোর সুপারিশ করেছেন, যা নির্দেশের পর্যায়ে পড়ে না। ঋণখেলাপিদের সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মধুচন্দ্রিমার সম্পর্কে ভাঙন ধরাতে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর