বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পর্যটন নগরী কক্সবাজার

বন্ধ হোক অপরিকল্পিত নগরায়ণ

পর্যটনের ক্ষেত্রে দুনিয়ার যে সব দেশ সবচেয়ে পিছিয়ে তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। অথচ পর্যটনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিবেচিত হবে এমনটিই প্রত্যাশিত। এ দেশে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবন। যে বনের বাঘকে বলা হয় দুনিয়ার বাঘ কুলের রাজা। সুন্দরবনের হরিণের সৌন্দর্যের তুলনা সে নিজেই। এদেশে রয়েছে কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত যেখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য যে কারোর চোখ জুড়াবে। দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা ও সিলেট পর্যটনের আদর্শ স্থান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। হাওর এলাকার পর্যটন সম্ভাবনাও অজুত। পর্যটনের ক্ষেত্রে অসংখ্য স্থানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে দৃষ্টিভঙ্গিগত পশ্চাৎপদতার কারণে। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত পর্যটনের জন্য অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি করলেও সে সম্ভাবনাকে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে কক্সবাজারে যেখানে-সেখানে স্থাপনা গড়ে তোলার কারণে। কিন্তু সাগরপাড়ের ভূপ্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়েই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে কক্সবাজার শহর। অপরিকল্পিত নগরায়ণে এ পর্যটন নগরের পরিবেশ ও প্রকৃতি ঝুঁকিতে রয়েছে। যেখানে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ, যত্রতত্র পাহাড় কাটা, উপকূলের সৌন্দর্যবর্ধনকারী ঝাউবন নিধনসহ নানা অব্যবস্থাপনায় কক্সবাজার তার বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত ও অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। এ লক্ষ্যে শহরের কলাতলীতে গড়ে উঠেছে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল-গেস্টহাউস। তবে সেখানকার ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা অপরিকল্পিত। সড়ক নির্মাণেও রয়েছে অব্যবস্থাপনা। ফলে যানজট লেগেই থাকে। কক্সবাজার পৌর শহরে ৩০ শতাংশ পাহাড়ি এলাকা রয়েছে। ইতিমধ্যে বন নিধনের পাশাপাশি অর্ধশতাধিক পাহাড় কেটে তৈরি হয়েছে ২০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি। যা কক্সবাজারে সৌন্দর্যই শুধু নষ্ট করছে না প্রাকৃতিক ভারসাম্যে বিসংবাদ ডেকে আনছে। পর্যটন নগরীর অস্তিত্ব রক্ষায় এসব যথেচ্ছতা বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর