শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আজানের গুরুত্ব ও মুয়াজ্জিনের মর্যাদা

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

আজানের গুরুত্ব ও মুয়াজ্জিনের মর্যাদা

ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য ও নিদর্শন হলো আজান। আজানের মাধ্যমে মহান আল্ল­াহ-তায়ালার একাত্মবাদ, বড়ত্ব ও সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দৈনিক পাঁচবার আজানের সুমধুর তানে মুমিনের হৃদয়ে ইমানের জোয়ার আসে, খোদাপ্রেমে সিক্ত হয় মুমিনের অন্তরাত্মা। আজান শোনামাত্র মুসলমানগণ সব ভেদাভেদ ভুলে মসজিদে গিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে  লাশারিকের স্বীকৃতি দেন। আর সে অপূর্ব দৃশ্য অবলোকন করে যুগে যুগে অগণিত অমুসলিম ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইমানের শরাব পান করে ধন্য হয়েছেন। সঙ্গত কারণেই মুসলিম সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আজানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

আজানের তাৎপর্য সম্পর্কে মহান আল্ল­াহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, আর যখন তোমরা নামাজের দিকে আহ্বান কর (আজান দাও), তখন তারা (কাফেররা) একে হাসি-তামাশা ও ক্রীড়া-কৌতুক হিসেবে গ্রহণ করে। এর কারণ হচ্ছে তারা এমন সম্প্রদায়, যাদের বুদ্ধি-বিবেক নেই। (সূরা মায়েদা, আয়াত-৫৮)। মহান আল্ল­াহতায়ালা এ সম্পর্কে আরও ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয় (আজান দেওয়া হয়), তখন তোমরা আল্ল­াহর স্মরণের দিকে (নামাজের দিকে) ধাবিত হও। আর ক্রয়-বিক্রয় বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা, আয়াত-০৯)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যখন আজান দেওয়া হয়, তখন শয়তান বায়ু নির্গমন করতে করতে এত দূরে চলে যায় যে, সেখান থেকে আজান শোনা যায় না। (বোখারি)।

প্রিয়নবী (সা.) আরও ইরশাদ করেন, যখন নামাজের সময় হয়, আর তোমরা দুজন ব্যক্তি থাক, তাহলে তোমাদের থেকে একজন আজান ও ইকামাত দেবে এবং দুজনের মধ্যে যে বড় সে ইমামতি করবে। (বোখারি)।

যে ব্যক্তি আজান দেয়, শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুয়াজ্জিন বলা হয়। আমাদের সমাজে কতিপয় মানুষ আজান দেওয়াকে নিচু কাজ মনে করে, অথচ আজান দেওয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত একটি আমল। কেয়ামতের দিবসে মুয়াজ্জিনগণ বিশেষ মর্যাদাবান হবেন। সেদিন চন্দ্র, সূর্য, পাহাড়-পর্বত, নদনদী, গাছপালা, পশু, পাখি এবং প্রত্যেক প্রাণী ও নিষ্প্রাণ দুনিয়াতে যাদের কাছে মুয়াজ্জিনের আজান পৌঁছত, সবাই তার জন্য সাক্ষ্য দেবে। মুয়াজ্জিনের জন্য রয়েছে অফুরন্ত নেয়ামত, সুউচ্চ মর্যাদা ও জান্নাতের সুসংবাদ।

মহান আল্ল­াহতায়ালা সূরা হা-মীম সেজদার ৩৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা কার? যে আল্ল­াহর দিকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলমান।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর