শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা যেন বঞ্চিত না হয়

কোটা প্রথা আর থাকছে না প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোটা পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশই অনুমোদন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, শিক্ষার্থীরাই যেহেতু কোটা প্রথা চায় না সেহেতু তা রাখা হবে না। এ বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে দেন। সে কমিটির প্রতিবেদনে কোটা প্রথা বাতিলের সুপারিশ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছে দেওয়া সরকারপ্রধানের একটি প্রতিশ্র“তি পূরণ করা হলো। এর ফলে এখন থেকে সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ দুই ক্ষেত্রে আর কোনো কোটা থাকবে না। মন্ত্রিসভার বৈঠকে একাধিক সদস্য কোটা বাতিলে আপত্তি জানান। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সীমিত আকারে হলেও তারা কোটা রাখার পক্ষে মত দেন। ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা রাখার বিষয়ে আইনের ব্যাখ্যাও তুলে ধরেন মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বলেছেন, কোটা বাতিলের বিষয়ে অচিরেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা বহাল থাকবে। স্মর্তব্য, সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করে কোটা পর্যালোচনা-সংক্রান্ত কমিটি। কোটা বাতিলের ফলে মুক্তিযোদ্ধা ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের চাকরিপ্রার্থীরা এতদিন যে সুবিধা পেতেন তা থেকে তারা বঞ্চিত হবেন। ইতিমধ্যে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা। দেশের জন্য যারা অনন্য অবদান রেখেছেন তাদের সন্তানদের জন্য কিছুটা সুবিধা ন্যায্যতার বিচারেও প্রাপ্য। আমরা আশা করব, কোটা প্রথা বাতিল হওয়া সত্ত্বেও সরকার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থা নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর