শিরোনাম
শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইংল্যান্ডের বৃহৎ হোলসেল মার্কেট : রপ্তানি বাণিজ্যে পিছিয়ে বাংলাদেশ

শাইখ সিরাজ

ইংল্যান্ডের বৃহৎ হোলসেল মার্কেট : রপ্তানি বাণিজ্যে পিছিয়ে বাংলাদেশ

২০১৩ সালে গিয়েছিলাম যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অবস্থিত অন্যতম বৃহৎ কৃষি-পণ্যের হোলসেল মার্কেটে। বিশাল বাজারজুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কৃষিপণ্যের দারুণ সম্ভার দেখে প্রথমে মুগ্ধ হয়েছিলাম। কী ছিল না সেখানে! আমড়া, পেয়ারা, তরমুজ, আম, লেবু, লাউ, কুমড়া, বেগুন, চিচিঙ্গা, বরবটি, ঢেঁড়স, করলা থেকে শুরু করে কচুর লতি, ধনেপাতা, পালংশাক এমনকি কলাপাতাও বিক্রি হতে দেখেছি। পুরো বাজার ঘুরে বাংলাদেশের কোনো পণ্য পাইনি। আমড়া, পেয়ারা, তরমুজ গিয়েছে থাইল্যান্ড থেকে। লাউ, কুমড়া ইতালির। লেবু মিসরের। ডোমিনিকান রিপাবলিক থেকে বেগুন। মেক্সিকো থেকে পিয়াজপাতা। খুব মর্মাহত হয়েছিলাম আমাদের দেশের কোনো পণ্য না দেখে। অথচ পৃথিবীর অনেক অনুন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আসা কৃষিপণ্য সেখানে রয়েছে। ২০০৬ সালে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়ে দেখেছি নামমাত্র প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জোহরবারু থেকে আনারস রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের মার্কেটে। আবার দেখেছি উগান্ডা থেকে পুদিনা-পাতা রপ্তানি হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। কিন্তু কৃষিতে বিস্ময় জাগানিয়া সাফল্যের পরও বাংলাদেশের কৃষিপণ্য কেন বিদেশের এই বৃহৎ পাইকারি বাজারে ঢুকতে পারছে না? বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে যা পেয়েছিলাম তা সত্যিই হতাশ করেছিল। বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকরা যুক্তরাজ্য সরকারের পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামোন্নয়নমূলক দফতর ডেফরার নির্ধারিত মান অনুসরণ করতে ব্যর্থ। তখন যুক্তরাজ্যের এথনিক বাজারগুলোও (মহল্লাভিত্তিক বাজার) ঘুরে দেখেছি। বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেসব লোকাল বাজারে বেশি যায়, সেসব বাজারে দেখেছি বাংলাদেশি কৃষিপণ্যের ব্যাপক চাহিদা। সেসব বাজারের বিক্রেতারা নিজ উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য সেখানে নিয়ে বিক্রি করত। বেশ বড় একটা বাজার আমাদের দখলে ছিল। কিন্তু ডেফরার নির্ধারিত মান সার্টিফিকেটে আমাদের দেশের কিছু পণ্যের আনুষ্ঠানিক আমদানিতে ছিল বাধা। সেসব পণ্যের মধ্যে ছিল প্রধানত লেবু, বিভিন্ন সবজি ও পান। ওই বাধা দূর করার জন্য আমাদের দেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে মানসম্পন্ন সবজি উৎপাদন ও প্যাকেজিংয়ের জন্য একটি কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয় তখন। বিষয়গুলো নিয়ে চ্যানেল আইয়ের ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানে পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদনও প্রচার করি তখন। অনেক কৃষক প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেন। কিন্তু দু-এক বছর পর অধিদফতরের কর্মসূচি শেষে পুরো কার্যক্রমটি ঝিমিয়ে পড়ে।

পাঁচ বছর পর যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের বর্তমান অবস্থাটি পর্যবেক্ষণ করতে গত আগস্টে গিয়েছিলাম লন্ডনের স্পিটালফিল্ড হোলসেল মার্কেটে। বেশ পুরনো একটি বাজার। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রায় ৩৫০ বছর আগে। ১৯৯১ সালের আগ পর্যন্ত এর নাম ছিল ‘ওল্ড স্পিটালফিল্ড মার্কেট’। পরে এর নাম হয়েছে ‘নিউ স্পিটালফিল্ড মার্কেট’। লন্ডন শহরে যানবাহনের চলা নির্বিঘœ করতে মার্কেটটির স্থান ও পুরনো কাঠামোর বেশকিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে। মার্কেটটিকে পুরোপুরি সবজি ও ফলের পাইকারি বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এটিও ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ ফল ও সবজির পাইকারি বাজার। যেখানে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকেই ফল-ফসল আমদানি হয়ে আসে। এই মার্কেটে রয়েছে সবজি, ফলসহ নানারকম কৃষিপণ্যের ১১৫টি ব্যবসায়ী ইউনিট বা আড়ত। এর পাশাপাশি রয়েছে বহুসংখ্যক ছোট আকারের আড়ত। এখানে ব্রিটিশ নাগরিকদের পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রবাসী নাগরিকদের পাইকারি ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। আমদানি কৃষিপণ্য নিয়ে তারা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে যেমন বিক্রি করেন, অন্যদিকে অনেকেই পাইকারি পণ্য বিকিকিনির পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়েও সরবরাহ করেন। এ বাজারে এমন কিছু কৃষিপণ্য আসছে যার আকার, আকৃতি বাংলাদেশের পণ্যের মতোই। আমার মূল অনুসন্ধান ছিল বাংলাদেশের কৃষিপণ্য আমদানি হয়ে এখানে আসছে কিনা। পুরো বাজার ঘুরে দেখি লাউ আছে স্পেনের, করলা ভারতের, শ্রীলঙ্কার কাঁচা মরিচ। বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। মোট উৎপাদন ৪৬ হাজার মেট্রিক টন। অথচ লন্ডনের এ বাজার দখল করে আছে থাইল্যান্ডের পেয়ারা। হতাশ হতে হয়। বাজার ঘুরে ঘুরে কথা বলি বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সঙ্গে। কথা হয় প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও। না, বাংলাদেশের কোনো পণ্য সেখানে নেই। ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি পণ্য না থাকার বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেছেন। এক. বাংলাদেশি পণ্যের প্যাকেজিং ভালো নয়। ফলে পণ্য বাজারে আসতে আসতে নষ্ট হয়ে যায়। দুই. বাংলাদেশি পণ্যের ওজন ঠিক থাকে না। প্যাকেটের গায়ে যে ওজন লেখা থাকে তা হয় প্যাকেটসহ। প্যাকেটের ওজনই থাকে প্রায় ৪০০ গ্রাম। তিন. বাংলাদেশি পণ্যের দাম থাকে বেশি। একই পণ্য অন্য দেশেরটা পাওয়া যায় কম মূল্যে। চার. বাংলাদেশি পণ্য HACCP  নির্দেশিত উপায়ে উৎপাদন ও বাজারজাত হয় না। এর বাইরেও নানা জটিলতা রয়েছে, রয়েছে এক রকমের উদাসীনতাও। আমাদের উদাসীনতার ফাঁকে সুযোগ নিয়ে নিচ্ছে পৃথিবীর অনেক দেশ। লন্ডনের লেইটনের স্পিটালফিল্ড হোলসেল মার্কেটের প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা জানালেন আমাদের দেশের কৃষিপণ্য চোরাই পথে অন্য দেশে যাচ্ছে, সেখান থেকে অন্য দেশের পক্ষে রপ্তানি হয়ে বড় বড় হোলসেল মার্কেট ও আন্তর্জাতিক মান বিবেচনার শর্ত পূরণ করে এই বাজারে এসে পৌঁছে যাচ্ছে। এ নিয়ে প্রবাসী ব্যবসায়ীদের অনেক খেদও রয়েছে।

পাঠক! এ তো গেল স্পিটালফিল্ড হোলসেল মার্কেটের চিত্র। এবার আসি এথনিক মার্কেটগুলোর বিষয়ে। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ অধ্যুষিত এলাকাগুলোর বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা দেখেছিলাম। এবার গিয়েছি ইস্ট লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেলে। যেখানে বাংলাদেশির মিলনমেলা। নানারকমের সবজি আর ফল-ফলারির ভোক্তা বাজার হিসেবেই এ জায়গাটি বাঙালি মহলে ব্যাপক পরিচিত। এখানেই বহুসংখ্যক বাঙালি ব্যবসায়ীর কাঁচা পণ্যের খোলা দোকান বা স্টল রয়েছে। দোকানে দোকানে যেসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে তার মধ্যেও দিব্যি বাংলাদেশের পণ্য রয়েছে। কিন্তু বিক্রেতারা নানা কারণেই এ পণ্যগুলোর পরিচিতি গোপন রাখতে চান। তারা বলছেন, বাংলাদেশের পণ্যের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। কথা বলি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রবাসী ভোক্তা বা ক্রেতাসাধারণের সঙ্গে। যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় তা হলো, তাদের কাছে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য মানেই বিষাক্ত কিছু। অভিযোগ আমাদের উৎপাদিত পণ্যে অতিমাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়া কৃষিপণ্য মানসম্মত উপায়ে বাজারজাত না করার অভিযোগও ছিল তাদের।

সেখান থেকে যাই বাংলা টাউনে। ইস্ট লন্ডনের ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি শপের মধ্যে ‘বাংলা টাউন’ এক পরিচিত ও প্রসিদ্ধ নাম। বাঙালি ক্রেতাদের কাছে দারুণ পছন্দের এক মার্কেট প্লে­স। সেখানে প্রবেশমাত্রই মন ভালো হয়ে যায় আমাদের সুপরিচিত সব কৃষিপণ্যের পসরা দেখে। বাঙালি ক্রেতারাও বিশ্বাস করেন এগুলো বাংলাদেশের পণ্য। কিন্তু অফিশিয়ালি এসব পণ্যকে বাংলাদেশি হিসেবে উল্লেখেই যেন আপত্তি। অবশ্য বাংলা টাউনের স্বত্বাধিকারী রফিক হায়দার জানালেন এসব পণ্যের অধিকাংশই এসেছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে। বেগুন এসেছে হল্যান্ড থেকে। কচুর লতি মালয়েশিয়ার। থাইল্যান্ডের পেয়ারা। তিনি আমাকে বাংলাদেশ থেকে আসা আমড়া দেখালেন। আকারে যেমন ছোট দেখতেও সতেজ নয়। অথচ আমাদের পথেঘাটে বিক্রি হচ্ছে কত বড় আর সুন্দর আমড়া। বরিশালের বাজারে আমড়ার তেমন দামই পাচ্ছে না কৃষক। আমাদের দেশের খ্যাতি ছিল সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে। পাটের জন্য আমরা পৃথিবীখ্যাত। অথচ বাংলা টাউনে বিক্রি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডান থেকে আসা পাটশাক। কৃষিপ্রযুক্তিগত দিক থেকে এবং আর্থ-সামাজিকভাবে আমাদের দেশের চেয়ে বহু পেছনে থাকা দেশ থেকেও সবজি, ফলসহ বিভিন্ন কৃষি-পণ্য আসছে। সবজি উৎপাদনে সারা পৃথিবীতে আমরা তৃতীয় স্থানে পৌঁছে গেলেও রপ্তানি বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো অবস্থান নেই। দীর্ঘ বাণিজ্যিক অভিজ্ঞতা থেকে এর পেছনের কারণগুলো সম্পর্কে জানালেন লন্ডনস্থ বাংলা টাউন গ্র“প অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্রিটিশ বাংলাদেশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রফিক হায়দার। তার মতে, ১৯৮২ সাল থেকে এথনিক মার্কেটগুলোয় ধীরে ধীরে চাহিদা তৈরি হতে থাকে বাংলাদেশি কৃষিপণ্যের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেমন অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে, তেমনই বড় হয়েছে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের বাজার। বাংলাদেশের নানা সবজি, পানসহ এক শর অধিক পণ্য রপ্তানি হতো লন্ডনের বাজারে। ১৯৯৬-৯৮ সালে এ বাজার মোটামুটি বড় আকার ধারণ করে। কিন্তু ২০০০-২০০১ সালের দিকে ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশ এ বাজারে প্রবেশ শুরু করে। এরপর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল প্রভৃতি কারণে যখন বাংলাদেশ থেকে কৃষি -পণ্য আমদানি করা সম্ভব হচ্ছিল না তখন অন্য দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেন বাজার উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। উদ্যোক্তাদের নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যায় তাদের দেশে এবং সুসম্পর্ক তৈরি করে বাজারটি তারা দখল করে নেয়। রফিক হায়দার বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, কোনো পণ্য আমদানি করতে চিঠি দিতে হয় হাইকমিশনকে, সেই চিঠি হাইকমিশন থেকে যায় এক্সপোর্ট ব্যুরোতে, এক্সপোর্ট ব্যুরো থেকে যায় কমার্সে, সেখান থেকে সিভিল এভিয়েশনে। এভাবে দীর্ঘসূত্রতার কারণেও বিশাল এ বাজার আমরা হারিয়েছি। কৃষির সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে উৎপাদন যেমন জড়িত, একই সঙ্গে স্থানীয় বাজার ও রপ্তানি বাণিজ্যও এর গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। আমাদের কৃষিপণ্য বিদেশে ব্যাপক রপ্তানি শুরু করা গেলে কৃষির যে উন্নয়নের মুখ আমরা দেখেছি তার সঙ্গে একই গতিতে এগিয়ে যেতে পারতেন কৃষক, একইভাবে কৃষি বাণিজ্যের হাত ধরে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগ্রতিও বেড়ে যেত কয়েক ধাপ। ২০০৪ সালে যখন হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান শুরু করি তখনই সবজির রপ্তানি বাণিজ্য ও এর সম্ভাবনা নিয়ে কাজ শুরু করি। সে সময় সংশ্লি­ষ্ট সব মহল থেকে জানানো হয়েছিল এয়ার কার্গোতে জায়গা সংকটের কথা। কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে বহুদিন ধরে এই অজুহাত চালু রাখা হয়। বাংলাদেশের কৃষিসমৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত হওয়ায় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও আন্তরিকতা রয়েছে বাংলাদেশের পণ্য বিদেশের বাজারে ব্যাপক ভিত্তিতে রপ্তানির ব্যাপারে; কিন্তু আমাদের দিক থেকেই রয়েছে উদাসীনতা।

লন্ডনের বাজার ঘুরে হতাশ হলেও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সাম্প্রতিক রিপোর্ট আশাজাগানিয়া। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত জুলাই ও আগস্টে ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৮ শতাংশ বেশি। আগের বছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১০ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের। বাংলাদেশের কৃষিপণ্য বিশ্বের ১২১টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। আর গত ছয় অর্থবছরে এ খাত থেকে মোট আয় হয়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার। এই পুরো আয় এথনিক বাজারকেন্দ্রিক। আজ আছে, কাল নেই। লেখাটি শুরু করেছিলাম ইউরোপ, আমেরিকা আর মধ্যপ্রাচ্যের চেইন শপে আমাদের কৃষিপণ্য নেই, যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পণ্য আছে। সেখানে জায়গা করে নিতে হলে আমাদের কৃষিপণ্য উৎপাদনের ব্যাপারে সে দেশের বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়মনীতি বা শর্তগুলো সম্পূর্ণ অনুসরণ করতে হবে; যা আমরা আজও পেরে উঠিনি। অথচ সময়টা এখন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের, তা হোক দেশের ভিতরের বাজার কিংবা রপ্তানি বাজার।

আমাদের কৃষিপণ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের স্বল্পতা যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে কোল্ড স্টোরেজের অপ্রতুলতা। যোগাযোগব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতি বছর শাক-সবজি ও ফলমূল নষ্ট হচ্ছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সরকার যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় তবে কোটি কোটি টাকার বিদেশি বাজার আমাদের উৎপাদিত সবজি-ফলমূল, মাছ, মাংস দখল নিতে পারবে। এতে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে, সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশের কৃষকের জীবন।

 লেখক : মিডিয়া ব্যক্তিত্ব

[email protected]

সর্বশেষ খবর