শিরোনাম
শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দখলস্বত্বের রাজনীতি

এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

উপমহাদেশের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের প্রভাব যুগ যুগ ধরে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান সব দেশের রাজনীতিতেই পরিবারতন্ত্রের জয়জয়কার। এতদিন এ বিষয়টি সীমাবদ্ধ ছিল শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিতে। আমাদের দেশেও পরিবারবিশেষের প্রতি দেশবাসীর সংশয়াতীত ভালোবাসার জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। তবে অন্যত্র সে যুক্তি অনেকটাই বেমানান। তার পরও পরিবারতন্ত্র এলাকাভিত্তিক রাজনীতিতেও দখলস্বত্ব কায়েম করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে পরিবারতন্ত্র আরও পাকাপোক্ত রূপ ধারণ করবে বলেই অনুমিত হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বয়সের ভারে নুয়ে পড়া যেসব নেতা নির্বাচন করতে পারছেন না তারা চাইছেন দলীয় মনোনয়ন যেন তাদের বদলে স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, ভাইয়েরা পান। দুই দলেই মনোনয়ন নিয়ে চলছে এবার পরিবারতন্ত্রের লড়াই। অতীতেও কোনো মন্ত্রী-এমপির মৃত্যু বা তাদের শূন্য আসনের উপনির্বাচনে পরিবারের সদস্যরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন পেয়েছেন। কেউ কেউ মামলায় কেউ বা শারীরিক অসুস্থতায় অক্ষম বলে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারছেন না; তাই বলে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ভাগ্যে মনোনয়ন জুটুক এমনটাও তারা চাইছেন না। কি আওয়ামী লীগ, কি বিএনপি সব দলেই বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যদের একাংশ নিজেদের শক্তি-প্রভাব পরিবারের সদস্যদের মনোনয়ন লাভের জন্য বিনিয়োগ করছেন। বিএনপিতে সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা এখন মামলায় জর্জরিত। কেউ মৃত কেউ বা অসুস্থ। তাই মামলা বা অন্য কোনো কারণে নির্বাচন করতে না পারলে পারিবারিক সদস্যকেই ‘প্রার্থী’ হিসেবে দেখতে চান তারা। কোনো কোনো আসনে ছাড় দিতে নারাজ দলের অন্য প্রার্থীরাও। নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক আসনে পরিবারতন্ত্রের প্রভাব দেশের গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। পরিবারবিশেষের বাইরে যেহেতু মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ নেই, সেহেতু সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতা-কর্মীরা রাজনীতিতে থাকার আগ্রহ হারাচ্ছেন। মেধাবীদের রাজনীতিতে আসার পথও বন্ধ করে দিচ্ছে পারিবারিক দখলস্বত্বের ধারা। গণতন্ত্রের স্বার্থেই এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর