জাল নোট দেশের অর্থনীতির জন্য সর্বনাশা থাবা বিস্তার করছে। জাল নোট তৈরি ও বিপণনের বিরুদ্ধে দেশে কড়া আইন থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে শৈথিল্যে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য কিছুতেই থামছে না। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্গাপূজা ও সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জাল নোট ব্যবসায়ীরা। অর্ধশত কোটি টাকা আয়ের টার্গেটে জাল নোট প্রস্তুতকারীরা পার করছেন ব্যস্ত সময়। নির্বাচন টার্গেট করে তারা রাজধানীর পাশাপাশি দেশের সব জেলা, উপজেলা, গ্রামে এরই মধ্যে প্রতিনিধি নিয়োগ করেছেন। মাঠপর্যায়ের ক্ষমতাবানদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে কীভাবে নকল টাকা ছাড়া হবে তার নীলনকশাও আঁকছেন। সম্প্রতি গ্রেফতার জাল নোট ব্যবসায়ীদের কাছে এমন তথ্য পেয়েছেন আইন প্রয়োগকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাব-পুলিশ সক্ষম দাবি করলেও এই ভয়ঙ্কর অপরাধের তদন্ত, বিচার ও অপরাধীর জামিনের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে জাল মুদ্রা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে জাতীয় কমিটি থাকলেও তাদের গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট। জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টিকারী জাল নোট সমস্যাকে বোধহয় তারা খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে পাশের দেশ ভারতের তৎপরতা উদাহরণ হতে পারে। জাল রুপি ধরা পড়লে তারা তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিচ্ছেন। সম্প্রতি মাদকের বিষয়ে সরকার যেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে, জাল মুদ্রার ক্ষেত্রে তেমনই কড়া মনোভাব গ্রহণ ছাড়া গত্যন্তর নেই। জাল নোট প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষীয় সদিচ্ছা যেমন দরকার, তেমন দরকার জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ। আদালতে গেলেই জামিন পাওয়ার পথ বন্ধেরও উদ্যোগ নিতে হবে।