রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নোবেল শান্তি পুরস্কার

যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠুক

নরওয়ের নোবেল কমিটি চলতি বছর ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানবাধিকার কর্মী নাদিয়া মুরাদ এবং কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মুকওয়েগেকে যৌথভাবে শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুদ্ধ ও সশস্ত্র সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণ এবং যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে অনন্য অবদান রাখায় এই শান্তি পুরস্কারে দুজনকে যৌথভাবে ভূষিত করা হলো। এর মাধ্যমে ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে জনমত গঠন এবং বিশ্বের বিবেকসম্পন্ন মানুষের মনোযোগ আরও আকর্ষিত হবে বলে আশা করা যায়। একবিংশ শতাব্দীতে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় গণহত্যা ও যৌন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে আইএস জঙ্গিদের দখলাধীন ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে। মানবতাবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ আইএস জঙ্গিরা পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ধর্মমত ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার পুরুষ সদস্যকে হত্যা করে। তাদের নারী সদস্যকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করে তারা। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ইয়াজিদি তরুণী নাদিয়া মুরাদকে ২০১৪ সালে আইএস জঙ্গিরা ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কোচো গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে তাদের আস্তানায় যৌনদাসী হয়ে থাকতে বাধ্য করেছিল। বেশ কিছুদিন আইএসের যৌনদাসী হিসেবে থাকার পর পালিয়ে আসা ২৫ বছর বয়সী এই তরুণী পরে ইয়াজিদি জনতার মুক্তি আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হন। গাইনোকলজিস্ট ডেনিস মুকওয়েগে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় শহর বুকাভুতে পাঞ্জি হাসপাতালের পরিচালক। জীবনের বড় একটি সময় সহকর্মীদের নিয়ে যৌন সহিংসতার শিকার নারীদের চিকিৎসা দিয়ে গেছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা ওই হাসপাতালে হাজার হাজার নারী চিকিৎসা পেয়েছে, যারা নানাভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায় এবং কঙ্গোর সাধারণ মানুষ গৃহযুদ্ধের নির্মম শিকার। উভয় ক্ষেত্রেই উগ্রপন্থিরা প্রতিপক্ষের নারী শিশুদের সম্ভ্রমহানিকে তাদের যুদ্ধের অংশ হিসেবে ভেবেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি নরপশুরা বাংলাদেশের অন্তত দুই লাখ নারীর সম্ভ্রম লুট করেছে। দুই মানবাধিকার কর্মীর নোবেল শান্তি পুরস্কার যৌন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর প্রতিরোধ জোরদার করার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর