রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জুলুম থেকে দূরে থাকতে বলে ইসলাম

মাওলানা আবদুর রশীদ

জুলুম-অত্যাচার ইসলামের দৃষ্টিতে একটি জঘন্য অপরাধ, যাকে সবাই ঘৃণা করে। এর কারণে পার্থিব জীবনে মানুষ হবে লাঞ্ছিত এবং পরকালে ভোগ করতে হবে কঠিন শাস্তি। এ সম্পর্কে আল্ল­াহ বলেন ‘জালিমদের জন্য পরকালে কোনো দরদি বন্ধু থাকবে না এবং তাদের জন্য কোনো সুপারিশকারীও হবে না, যার কথা মান্য করা হবে।’ (মুমিন, ১৮)

অন্যত্র তিনি আরও বলেন- ‘জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না। (হজ, ৭১)।  উপরোক্ত আয়াতদ্বয়ে  আল্ল­াহ একে অপরের ওপর অত্যাচার করা হতে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ অত্যাচারীর জন্য কিয়ামতের দিন কোনো সাহায্যকারী থাকবে না। সেদিন তার অত্যাচারের সমপরিমাণ নেকি অত্যাচারিত ব্যক্তিকে প্রদান করতে হবে। যা হবে তার জাহান্নামে যাওয়ার কারণ। এ জন্য জুলুম-অত্যাচার থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্ল­াহতায়ালা অন্যত্র বলেন ‘শুধু তাদের ওপর দোষারোপ করা হবে, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরা ৪২)। তিনি অন্যত্র বলেন ‘কিন্তু তারা ব্যতীত যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং     আল্ল­াহকে বারবার স্মরণ করে ও অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অত্যাচারীরা শিগগিরই জানবে তাদের গন্তব্যস্থল কোথায়। (শু’আরা ২২৭)। তিনি অন্যত্র আরও বলেন আর এরূপেই যখন তিনি কোনো জনপদের অধিবাসীদের পাকড়াও করেন যখন তারা অত্যাচার করে; নিঃসন্দেহে তাঁর পাকড়াও হচ্ছে অত্যন্ত কঠিন। (হুদ ১০২)। তিনি অন্যত্র আরও বলেন- ‘অতঃপর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, আমি ওই ভূখন্ডের উপরিভাগকে নিচে করে দিলাম এবং ওর ওপর পাকা মাটির পাথর বর্ষণ করতে লাগলাম, যা অবিরাম ছিল। (হুদ ৮২)। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে হজরত জাবির রাযি. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসুলুল্ল­াহ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম বললেন : তোমরা অত্যাচার করা হতে সাবধান থাক। নিশ্চয়ই অত্যাচার কিয়ামতের দিন হবে অন্ধকার, তোমরা কৃপণতা থেকে বেঁচে থাক কৃপণতা তোমাদের পূর্বের জনগণকে ধ্বংস করেছে। কৃপণতা তাদের অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করার প্রতি এবং হারামকে হালার করার প্রতি উৎসাহিত করেছিল। (মুসলিম, মিশকাত)। অপর একটি হাদিসে এসেছে হজরত আবু হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ  সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম বলেলেন : কারও ওপর তার ভাইয়ের যদি কোনো দাবি থাকে, মান-ইজ্জত অথবা অন্য কোনো কিছুর ওপরে জুলুম সম্পর্কিত তাহলে সে যেন ঐ দিন আসার পূর্বেই তার থেকে মাফ করিয়ে নেয়, যেদিন কোনো অর্থ-সম্পদ থাকবে না; বরং যদি কোনো নেক আমল থাকে তাহলে জুলুম পরিমাণ, তা নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি কোনো নেক আমল না থাকে তাহলে তার পাওনাদারের গোনাহের বোঝা নিয়ে তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারী)

 লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর