বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাদকবিরোধী আইন

সঠিকভাবে প্রয়োগও জরুরি

মাদকবিরোধী লড়াইয়ে সরকারের আপসহীন অবস্থান আরও নিশ্চিত করা হয়েছে প্রস্তাবিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮-এর খসড়ায়। খসড়াটি গত সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ইয়াবাকে ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে চিহ্নিত করে তা বিক্রয়, বিপণন এবং বহন করলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, ২০০ গ্রামের ওপরে কারও কাছে ইয়াবা পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদ- বা মৃত্যুদন্ড। এ ছাড়া অন্যান্য মাদকের ক্ষেত্রেও যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে মাদকের গডফাদারদেরও মৃত্যুদন্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। ডোপ টেস্টের বিষয়টিও রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। স্মর্তব্য, দেশে ইয়াবার বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করায় সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি নতুন করে প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেয়। এরই অংশ হিসেবে নতুন আইনটির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আশা করা হচ্ছে নতুন আইনটি পাস হলে মাদকবিরোধী লড়াইয়ে আইন প্রয়োগকারীদের হাত শক্তিশালী হবে। প্রস্তাবিত আইনে কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে ফাঁসানোর জন্য এ আইনের অপব্যবহার হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রস্তাবিত আইনে হেরোইন ও কোকেনের মতো মাদকদ্রব্যের পরিমাণ অনূর্ধ্ব ২৫ গ্রাম হলে কমপক্ষে দুই বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ২৫ গ্রামের বেশি হলে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আইনে মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে শনাক্তকরণে বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ডোপ টেস্ট করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। টেস্ট পজিটিভ হলে কমপক্ষে ছয় মাস ও সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদন্ড দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগের নামে যাতে এর অপব্যবহার না হয় তা নিশ্চিত করতে আইনে সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, যার কাছে মাদকদ্রব্য পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করা হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাবিত আইনে মাদক ব্যবসার গডফাদারদেরও শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে; যা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অর্থাৎ যারা মাদক ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ ও পৃষ্ঠপোষকতা করবে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা যাবে। মাদক দেশের একটি ভয়াবহ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। মাদক আগ্রাসন বন্ধে নতুন আইনটি অবদান রাখবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। এজন্য আইনের সঠিক প্রয়োগও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর