বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নকল-ভেজালের দৌরাত্ম্য

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

নকল-ভেজালের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে দেশের মানুষ। নকলের ভিড়ে আসল খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ছে। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে ওষুধ, প্রসাধন এমন কোনো পণ্য নেই যেখানে নকল-ভেজালের দৌরাত্ম্য নেই। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৭ বছরে উন্নয়নশীল দুনিয়ার সেরা ওষুধ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে কৃতিত্ব অর্জন যেমন করেছে, তেমন এ গর্ব খর্ব হচ্ছে নকল ওষুধ উৎপাদনের মহোৎসবে। নকল-ভেজাল-মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যসামগ্রীতে ছেয়ে যাচ্ছে দেশ। অবলীলায় এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে চোখের সামনেই। পণ্য যাচাইয়ের জন্য হলোগ্রাম, স্টিকার, স্ক্যানার, আরএফআইডি ট্যাগ, বারকোড ইত্যাদি সিস্টেম চালু আছে। কিন্তু সেসব হলোগ্রাম বা স্টিকারও যখন নকল করা হয় তখন আসল-নকল আলাদা করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। চকচকে মোড়কে মোড়ানো পণ্য মানেই যে ‘আসল’ নয় তা এখন এক পরীক্ষিত সত্য। বরং আসলের চেয়ে ‘নকল’ পণ্যের প্যাকেট বেশি উন্নত ও চকচকে। পুরান ঢাকার চকবাজার, লালবাগ ও কেরানীগঞ্জের অলিগলিতে প্রস্তুতকৃত নকল ও নিম্নমানের সাবান, চন্দন, মেছতা দাগনাশক বিভিন্ন ক্রিম, কালার মেহেদিসহ নানা প্রসাধনী, তেল, পারফিউম পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে। বিদেশি  রকমারি পণ্যের সমারোহে যে কারোরই চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার কথা। পৃথিবীর যত নামকরা ব্র্যান্ডের প্রসাধনসামগ্রী এর সবই তৈরি হচ্ছে ঢাকা ও আশপাশ এলাকার কারখানায়। মানুষ মানসম্মত পণ্য ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বিদেশি প্রসাধনী কিনতে গিয়ে শুধু কষ্টে অর্জিত অর্থের শ্রাদ্ধ করছে। সুন্দর হওয়ার জন্য কেনা প্রসাধনী ত্বকের সর্বনাশ ঘটাচ্ছে। রোগমুক্তির জন্য কেনা নকল ওষুধ রোগ বৃদ্ধিই শুধু নয়, মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে হাজির হচ্ছে। নকল-ভেজালের বিরুদ্ধে নজরদারির দায়িত্ব যাদের তারা নকলবাজদের দাস ও তস্যদাসের ভূমিকা পালন করায় সাধারণ ভোক্তারা অসহায় হয়ে পড়ছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যাদের পোষা হয় তাদের অনৈতিক ভূমিকা দেশবাসীর জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সর্বস্তরে কঠোর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে হবে। নজরদারির সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যাতে দেশবাসীর স্বার্থে দায়িত্ব পালনে বাধ্য হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর