বৃহস্পতিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গ্রেনেড হামলার রায়

হত্যা-ষড়যন্ত্রের অবসান কাম্য

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সংঘটিত ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে বিশেষ জজ আদালত। মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহতম এ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে। দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন গতকাল এ রায় দেন। এ রায়দানের মাধ্যমে নির্মম একটি হত্যাকান্ডের বিচার বিচারিক আদালতে শেষ হলো। ২১ আগস্টের হত্যাকান্ডের শিকার ২২ জন নেতা-কর্মীর স্বজন ও আহত কয়েক শ নেতা-কর্মী-সমর্থকের দীর্ঘ প্রতীক্ষারও অবসান হলো। আদালতের এ রায়কে চিরাচরিত নিয়মে বাদীপক্ষ স্বাগত জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো রায়ে ন্যায়ের প্রতিফলন ঘটেছে এমন মন্তব্য করেছে। পক্ষান্তরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো রায় প্রত্যাখ্যান করে এর বিরুদ্ধে আইনগত লড়াই চালানোর কথা বলেছে। স্মর্তব্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পৈশাচিক কায়দায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। বর্বর এ হামলায় নিহত হন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন। গ্রেনেড হামলাকালে নিজেদের জীবনের মায়া তুচ্ছ করে দলীয় নেতা-কর্মীরা মানববর্ম গড়ে তোলায় সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। তবে তাঁর কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গ্রেনেড হামলার পরপর হামলার তথ্য-উপাত্ত লোপাট করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে তৎকালীন সরকার। মামলার তদন্তের নামে তারা যে প্রহসনের আশ্রয় নেয়, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ছিল জজ মিয়া নাটক। সরকারের ভিতরেই যে হামলাকারীদের শিকড় বিস্তৃত ছিল সে সন্দেহই জোরদার করে তৎকালীন সরকারের কা-জ্ঞানহীন আচরণ। আমরা আশা করব, হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ইতি ঘটাতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ভূমিকা রাখবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর