সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

উত্তরখানের গ্যাস দুর্ঘটনা

জনসচেতনতা গড়ে তুলুন

রাজধানীর উত্তরখানে গ্যাসের আগুনে এক পরিবারের আট সদস্যের সবাই দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা গেছেন এক দম্পতি। অন্য ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। উত্তরখানে হেলাল মার্কেটের পার্শ্ববর্তী এক বাড়ির নিচতলায় সকালে চুলা জ্বালাতে গিয়ে মুহূর্তের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয় পরিবারের সব সদস্য। দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন এক মহিলা জানিয়েছেন, গ্যাসলাইনের লিকেজের ব্যাপারে বাড়িওয়ালার কাছে অভিযোগ করার পরও লিকেজ বন্ধের উদ্যোগ নেননি বাড়িওয়ালা। অন্যদিকে বাড়িওয়ালা এবং উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ধারণা অসাবধানতার কারণে সম্ভবত এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাতের বেলায় বাড়িটির চুলায় গ্যাস ছিল না। অসতর্ক অবস্থায় চুলার সুইচ বন্ধ না করেই পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়েন। জানালা-দরজা বন্ধ থাকায় গ্যাস বাইরে বের হতে পারেনি। ভোরে রান্নার জন্য চুলায় আগুন জ্বালানো মাত্র পরিবারের সবাই দগ্ধ হয়। দগ্ধদের মধ্যে দুজন স্কুলছাত্র এবং বাকি সবাই গার্মেন্টকর্মী। রাজধানীতে গ্যাসলাইন লিকেজের কারণে দুর্ঘটনার পাশাপাশি হতাহতের ঘটনা প্রায়শই ঘটেছে। উত্তরখানের দুর্ঘটনায় চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুমুখে ঢলে পড়া আজিজুলের শরীরের ৯৯ শতাংশ এবং তার স্ত্রী মোসলেমার শরীরের ৯৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি অন্য পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে সুফিয়ার শরীরের ৯৯ শতাংশ, তার মেয়ে পূর্ণিমার ৮০ শতাংশ, পূর্ণিমার ছেলে সাগরের ৬৬ শতাংশ, ডাবলু মোল্ল­ার ৬৫ শতাংশ এবং তার ছেলে সৌরভের শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া শিশু সৌরভের মা আঞ্জুয়ারা বেগমের (২৫) শরীরের ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটলেও নাগরিক সচেতনতা ও সতর্কতার অভাবে দুর্ঘটনার রাশ টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। উত্তরখানে একই পরিবারের আট সদস্যের সবারই অগ্নিদগ্ধ হওয়া যে ট্র্যাজিডির জম্ম  দিয়েছে একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই তা এড়ানো সম্ভব হতো। আমরা আশা করব দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে যথাযথ তদন্ত করা হবে। গ্যাস দুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর