বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দারিদ্র্য বিমোচন

বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিন

দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের সাফল্য দুনিয়ার অন্য সব দরিদ্র দেশের জন্য অনুকরণীয় মডেলে পরিণত হয়েছে। গত আট বছরে দেশের এক কোটি ১৫ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার শেকল ছিন্ন করে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। এ সাফল্যকে বুকে ধারণ করে বুধবার বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। স্বাধীনতার পর গত ৪৭ বছরে দেশের জনসংখ্যা ৭ কোটি থেকে বেড়ে ১৭ কোটি ছোঁয়ার পথে। তারপরও বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে নজর কাড়া সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। এর পাশাপাশি স্বীকার করতে হবে দেশে এখন হতদরিদ্রের হার ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। সংখ্যার হিসাবে ৩ কোটি ৮৮ লাখ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপে হতদরিদ্রের তথ্য উঠে এসেছে। ২০১০ সালের জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। সংখ্যায় হিসাব করলে প্রায় পাঁচ কোটি। আর সর্বশেষ ছয় বছরের ব্যবধানে দারিদ্র্যের হার কমেছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। অবশ্য দারিদ্র্য কমার এই হার আগের ছয় বছরের চেয়ে কম। অর্থনীতিবিদদের মতে, গত ছয় বছরে যে হারে দারিদ্র্য কমেছে সে হারে কর্মসংস্থান হয়নি। এ সময়ে মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসী আয়ও কমে গেছে। অন্যথায় দারিদ্র্য বিমোচনের চিত্র সে অন্য রকম হতে পারত তা সহজে অনুমেয়। সরকারের তথ্য অনুসারে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির জন্য জিডিপির ৩৫ শতাংশ বিনিয়োগ দরকার। অথচ বিনিয়োগ এখন ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। দারিদ্র্য বিমোচনে সাফল্য অর্জিত হলেও বেসরকারি বিনিয়োগ আশাব্যঞ্জক না হওয়ায় তা কতটা টেকসই সেটি সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। কর্মসংস্থানের সুযোগ কাক্সিক্ষত হারে বৃদ্ধি না পাওয়ায় এ ক্ষেত্রে হতাশা থেকেই যাচ্ছে। দেশে সরকারি খাতের বিনিয়োগ মোটামুটি সন্তোষজনক হলেও বেসরকারি খাতে সন্তুষ্টির অবকাশ কম। দারিদ্র্য বিমোচনে প্রত্যাশিত সাফল্য পেতে হলে বেসরকারি কর্মসংস্থানে গতি সৃষ্টি করতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন শুধু নয়, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন যাতে হয়, সে বিষয়টিও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর