বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডলারের মূল্যবৃদ্ধি

জনদুর্ভোগ কোনোভাবে কাম্য নয়

ডলারের দাম ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায় পৌঁছেছে এক লাফে। টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। এর ফলে তেল, ডাল, গম, চিনি ইত্যাদি ভোগ্যপণ্যের দাম যেমন বাড়বে তেমন বৃদ্ধি পাবে শিল্প স্থাপনের জন্য আমদানিকৃত মেশিনপত্রের দাম। দেশে শিল্প স্থাপনে ডলারের দাম বৃদ্ধি প্রতিবন্ধকতায় পরিণত হবে। কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, ভারতে রুপির মান ধারাবাহিকভাবে অবমূল্যায়ন হওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ধরে রাখতেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কিছুটা অবমূল্যায়ন হওয়া ইতিবাচক। তবে নির্বাচনের আগে ডলারের দাম বৃদ্ধি জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা সে বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ডলারের দাম বাড়লে আমদানি খরচ বাড়ে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব স্থানীয় বাজারে পড়বে। ফলে ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানো জরুরি। যেন কোনোভাবেই ডলারের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কেউ যেন ডলারের দাম বাড়াতে না পারে সেদিকেও নজর দিতে হবে। গত কয়েক মাসে আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেলেও তার বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ সেভাবে বাড়েনি। ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ কমে যাওয়ায় টাকার বিপরীতে বিনিময় মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করলেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। আমদানি ব্যয়ের উচ্চ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ততটা না বাড়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ক্রমান্বয়ে কমছে। এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ ৩২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন থেকে ৩১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া কোনো মূল বিষয় নয়, সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যবৃদ্ধি কী প্রতিক্রিয়া ফেলবে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি যেহেতু টাকার মান হ্রাস করছে সেহেতু তা জনজীবনে কল্যাণের বদলে দুর্ভোগ বয়ে আনবে। তা রোধে অপ্রয়োজনীয় আমদানি হ্রাস এবং রপ্তানি আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। রেমিট্যান্স আয় যাতে হুন্ডি চক্রের কবলে না পড়ে সে দিকে নজর রাখাও জরুরি। দেশ থেকে অর্থ পাচার বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর