শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চাকরি আইন-২০১৮

পাসের আগে আবারও ভেবে দেখুন

সরকারি কর্মচারীদের সব দিক থেকে পাইয়ে দেওয়ার যে নীতি সরকার গ্রহণ করেছে তা সংশ্লিষ্টদের জন্য সুখকর হলেও দেশবাসীর জন্য কতটা সুখের তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বর্তমান সরকারের আমলে বাড়ানো হয়েছে স্পুটনিক গতিতে। অথচ সরকারি চাকরিপ্রাপ্তিতে বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস ছাড়া অন্যত্র বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যোগ্যতা নয়, উৎকোচই যে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে তা ওপেন সিক্রেট। ফলে যোগ্যরা নয়, অযোগ্যরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে ঢোকার সুযোগ পায়। ৫ থেকে ২৫-৩০ লাখ টাকা খরচ করে যারা চাকরি পান তারা চাকরি জীবনে সেই টাকা সুদাসলে ওঠাতে কোন পথের আশ্রয় নেন তা দেশবাসীর অজানা নয়। সরকারি কর্মচারীদের বেতন কয়েক গুণ বাড়ানো এবং সহজশর্তে বাড়ি বানানো বা ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ সৃষ্টি সত্ত্বেও তাদের সিংহভাগের মধ্যে সততা ফিরে এসেছে কিনা তা খুঁজে দেখার মতো। ঠিক এ অবস্থায় ফৌজদারি মামলায় কোনো সরকারি কর্মচারীকে অভিযোগপত্রের আগে গ্রেফতার করতে সরকারের অনুমতি নেওয়ার বিধান রেখে চাকরি আইন ২০১৮-এর খসড়ায় মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন সংশ্লি­ষ্টদের যথেচ্ছতা বাড়াতে আরও সাহসী করবে কিনা ভেবে দেখার বিষয়। এ আইন দুদকের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানেও লাগাম পরাবে। কাউকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করতে হলে অভিযোগপত্র পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ফলে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি রোধে খুব সীমিতভাবে হলেও দুদক যে চেষ্টা চালাচ্ছে তাতে বাদ সাধা হবে। সরকারি কর্মচারীদের অভিযোগপত্র দাখিলের আগে সরকারের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার না করার বিধান যদি দেশের অন্যসব নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য হয় তবে তাতে কারোর আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু অন্য সবাইকে ইচ্ছা হলেই আটক করার বিধান রেখে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান কতটা গ্রহণযোগ্য, আইনটি পাসের আগে ভেবে দেখা উচিত। সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে যা ইচ্ছা তাই করার প্রবণতা যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না ওঠে তা নিশ্চিত করতে আইন পাসের ক্ষেত্রে সব দিক ভেবে
সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর