বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

কথা দিয়ে কথা রাখুক মিয়ানমার

চলতি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন শুরু হবে এমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ওই বৈঠকে বলা হয়েছে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবেই চলবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। প্রথম পর্যায়ে ঠিক কতজন রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য জানাননি মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব। তবে বলেছেন প্রথম ধাপের প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হলে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় গত মঙ্গলবার দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও বসবাস উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সরকার কাজ করছে। ফেরত যাওয়ার পর রোহিঙ্গারা যাতে আইনি সহায়তা পেতে পারে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে অন্তত ৭ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে নিপীড়নের শিকার হয়ে অন্তত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। পরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর নেপিদোয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর দফতরের মন্ত্রী চ টিন্ট সোয়ে একটি চুক্তি সই করেন। চুক্তির এক মাসের মধ্যে ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের বৈঠকে ৩০ সদস্যের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। রোহিঙ্গাদের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে সম্মানজনকভাবে স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তা একটি ইতিবাচক ঘটনা। আমরা আশা করব মিয়ানমার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং নিজেদের জাতীয় ঐক্যের স্বার্থেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তরিকতার পরিচয় দেবে। এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে তার কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর