শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডাকসু নির্বাচন

এ শুভ প্রক্রিয়া যেন থেমে না যায়

দুই যুগের বেশি সময় পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জট খুলছে, যা একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা। ইতিমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে হলভিত্তিক ভোটার তালিকা। এ ভোটার তালিকায় ১৮টি হলের ৩৮ হাজার ৪৯৩ জন শিক্ষার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। হলভিত্তিক এই ডাটাবেজের ভিত্তিতে ডাকসুর সংবিধান অনুযায়ী ডাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হবে। হলভিত্তিক ভোটার ডাটাবেজ প্রণয়নকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। তারা সুষ্ঠুভাবে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছে। একসময় দেশের মিনি পার্লামেন্ট হিসেবে ভাবা হতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদকে। কিন্তু কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি কালো চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছিল ২৮ বছর ধরে। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। তার আগে সামরিক শাসকদের আমলেও ডাকসুসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নজির রয়েছে। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ সামরিকতন্ত্র থেকে গণতান্ত্রিক শাসনের সোপানে পা রাখলেও অদৃশ্য কারণে রুদ্ধ হয়ে যায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। আমরা এ কলামে বার বার বলেছি, ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় গণতন্ত্রচর্চায় প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন শিক্ষাঙ্গনে যেমন গণতন্ত্রচর্চার সুযোগ সৃষ্টি করত তেমন পরিশীলিত রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৃষ্টিতেও অবদান রাখত। এর ব্যত্যয় হওয়ায় জাতীয় পর্যায়ে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনীতির প্রতি দায়বদ্ধ নেতৃত্বের বদলে টাকাওয়ালারা রাজনৈতিক অঙ্গনে জুড়ে বসার সুযোগ পাচ্ছে। দেশের রাজনীতি কলুষিত হচ্ছে সত্যিকারের রাজনীতিকদের বদলে ময়ূরপুচ্ছধারী কাকদের কারণে। আমাদের প্রত্যাশা, একদিকে আদালতের নির্দেশনা অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির সনির্বন্ধ আহ্বানে ডাকসুর ওপর থেকে অদৃশ্য নিষেধাজ্ঞার কালো চাদর অপসারণের যে শুভ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা থেমে থাকবে না। ডাকসু নির্বাচনের স্বার্থে ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থানও নিশ্চিত করা হবে। দখলবাজি অবস্থা থেকে মুক্ত করা হবে শিক্ষার্থীদের; যা গণতন্ত্রচর্চার জন্য অপরিহার্য বলেই আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর