শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে

সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ও উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিকহারে। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ধারণার চেয়েও ৬০ শতাংশের বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রের তাপ। নতুন এ তথ্য সমুদ্র উপকূলীয় দেশগুলোর জন্য অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে বাংলাদেশ, মালদ্বীপসহ সমুদ্র উপকূলীয় অনেক দেশের অস্তিত্বের জন্য সে সংকট সৃষ্টি করবে এটি অনেকেরই জানা। তবে সে ভয়াবহতা যে দ্রুতই ঘনিয়ে আসছে ‘ন্যাচার জার্নালে’ প্রকাশিত নতুন গবেষণায় সে আভাস দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে সেন্টার ফর পোলার অবজারভেশন অ্যান্ড মডেলিংয়ের নতুন এক গবেষণায় জানা গিয়েছিল, পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুর অ্যান্টার্কটিকায় সমুদ্রের তলদেশে বরফ গলার হার প্রতি ২০ বছরে দ্বিগুণ হয়ে পড়ছে যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ গুণ। গবেষণায় আভাস দেওয়া হয়েছিল, পূর্ববর্তী ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ও উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করে নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদন হয়েছে, ধারণার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি উত্তপ্ত হচ্ছে সমুদ্র। ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা বিজ্ঞানীরা একে মানবসৃষ্ট পরিস্থিতি বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণে কার্বন ডাইঅক্সাইড আগের চেয়ে অনেক বেশি বাড়ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বাড়লে অক্সিজেন কমে যাবে এবং উচ্চতা বাড়বে। পরিবেশগত উষ্ণতাও বৃদ্ধি পাবে। এতে ভবিষ্যতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা আরও কঠিন হয়ে যাবে; যা প্রাণিকুলের জন্য অশনিসংকেত। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও উষ্ণতা অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধির নতুন তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক। জলবায়ু পরিবর্তনের ধকলে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ব্যাপক ক্ষতির কবলে পড়েছে। উপকূল এলাকার লাখ লাখ মানুষ এ সর্বনাশা প্রক্রিয়ার প্রত্যক্ষ শিকার। সমুদ্রের লোনা পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার একর ফসলের জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দেড় দশক ধরে। জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। দেশের আবহাওয়ায়ও তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে; যা রোধে সরকারকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তাও নিশ্চিত করা দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর