রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

তামাক আগ্রাসন

আইন করে চাষ নিষিদ্ধ করা হোক

পার্বত্য চট্টগ্রামে তামাক চাষের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে ভয়াবহভাবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে তামাক চাষের বিরুদ্ধে সচেতনতা যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিক সে সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটছে বিপরীত ঘটনা। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি উদ্বেগের। এতে বলা হয়, তামাকের খেতে ছেয়ে যাচ্ছে পার্বত্য বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। প্রতি বছরই বাড়ছে তামাক চাষের পরিধি। ভুট্টা, সবজি ও ফলমূলের বদলে চাষিরা ঝুঁকছে তামাক চাষের দিকে। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা ছেয়ে গেছে তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ চুল্লিতে। যা পুরো উপজেলাকে গ্রাস করে ফেলেছে। তামাক চাষের পাশাপাশি তামাক পণ্য সেবনের মাত্রাও বাড়ছে পার্বত্যাঞ্চলে। তামাক সেবনের ফলে এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। তামাক প্রক্রিয়াজাত করণে পাহাড়ি এলাকার পরিবেশ দূষণও বাড়ছে সমানতালে। যা পাহাড়ি প্রাকৃতিক পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বিভিন্ন তামাক উৎপাদনকারী কোম্পানি পাহাড়িদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তামাক চাষে উৎসাহী করছেন। অন্য ফসল ফলানোর পরিবর্তে তামাক চাষ করলে বীজ, সার, সেচ দেওয়ার খরচ, নিড়ানি খরচসহ সব ধরনের আগাম সহায়তা দিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। ফলে পাহাড়ি এলাকার মানুষ অধিক লাভের আশায় তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। তামাক চাষ বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির একটি। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে এ খাতে। মানুষ অর্থ ব্যয় করে কিনছে মৃত্যুর পরওয়ানা। দেশে দ্রুত মাদকাসক্তির হার বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনেও তামাকের আগ্রাসন অনেকাংশে দায়ী। লক্ষ্য করা গেছে, তামাক দিয়েই ঘটে মাদকাসক্তির সূচনা। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় তামাক চাষের সম্প্রসারণ ঘটছে এটি অতি লাভজনক হওয়ার কারণে। এক একর জমিতে ধান চাষ করলে যেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ হয় সে ক্ষেত্রে ওই জমিতে তামাক চাষ করলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়। ফলে তামাকের আগ্রাসন থেকে দেশের পার্বত্য এলাকার মানুষ ও পরিবেশ রক্ষা করতে হলে আইন করে তামাক চাষ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষকরা যাতে অন্যান্য লাভজনক চাষাবাদে আগ্রহী হয় সে ব্যাপারে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর