সন্তানের জন্য মা-বাবা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। বাবা মায়ের কারণেই আমরা পৃথিবীতে জম্ম  লাভের সৌভাগ্য অর্জন করেছি। তারা আমাদের লালন পালনে অসামান্য আত্মত্যাগ করেছেন। মা-বাবার খেদমত করলে জান্নাত লাভ করা যায়। তাদের প্রতি অবহেলার জন্য আখেরাতের জীবনে কঠোর শাস্তি পেতে হবে। হজরত আবদুল্ল­াহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, মাতা-পিতার সন্তুষ্টির মধ্যেই নিহিত আল্ল­াহ্র সন্তুষ্টি এবং মাতা-পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যেই রয়েছে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। (তিরমিজি)। আবু দারদা (রা.) বললেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, মাতা-পিতা হলেন বেহেশতের দরজাগুলোর মধ্যবর্তী দরজা। এখন তোমার ইচ্ছা হয় দরজাটিকে রক্ষা কর, ইচ্ছা হয় নষ্ট কর। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)।

ইসলাম মা ও বাবার মধ্যে মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য পালনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, একদা এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার স্বজনদের মধ্যে কে সর্বাধিক সৌজন্যমূলক আচরণ লাভের অধিকারী? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে জিজ্ঞেস করল, তারপর কে, তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে আবার জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে আবারও জিজ্ঞেস করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে তিনি বললেন, তোমার মাতা। তারপর তোমার মাতা। তারপর তোমার মাতা। অতঃপর তোমার পিতা। এরপর তোমার নিকটবর্তী ব্যক্তিগণ। (বুখারি ও মুসলিম)। যারা বাবা মাকে বৃদ্ধ অবস্থায় পেয়েও তাদের সেবা করার সুযোগ নেয়নি তারা দুর্ভাগ্যের অধিকারী। সাহাবি আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তার নাসিকা ধূলিমলিন হোক, তার নাসিকা ধূলিমলিন হোক, তার নাসিকা ধূলিমলিন হোক। জিজ্ঞেস করা হলো, ইয়া রসুলুল্লাহ! কে সে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার কোনো একজনকে অথবা উভয়জনকে তাদের বৃদ্ধ অবস্থায় পেল কিন্তু বেহেশত লাভ করল না। (মুসলিম)।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুলুল্ল­াহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তির সর্বোত্তম সৎ কাজগুলোর অন্যতম কাজ হলো তার পিতার অবর্তমানে পিতার বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার এবং সদাচরণ করা। (মুসলিম)। 

            লেখক : ইসলামী গবেষক।