বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনী কর্মসূচি

অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধি গুরুত্ব পাক

রাজনীতি আর অর্থনীতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এ দুটিকে আলাদা চোখে দেখার সুযোগ নেই বললেই চলে। রাজনীতি যেমন অর্থনীতির ধরন নির্ধারণে ভূমিকা রাখে তেমন অর্থনীতিও কার্যক্ষেত্রে রাজনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়লে রাজনীতি তার পথ হারাতে বাধ্য। যে কারণে আগামী নির্বাচনে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচিতে অর্থনীতি-বান্ধব অবস্থান নেবে এমনটিই দেখতে চায় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। অর্থনীতির ভালোমন্দের সঙ্গে দেশের সাধারণ মানুষের ভালোমন্দ জড়িত থাকায় তাদের প্রত্যাশাও তাই। দেশকে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলো খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখবে দেশের প্রতিটি সচেতন মানুষ এমনটিই দেখতে চায় । দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। প্রধান খাদ্য চালের দাম বৃদ্ধি পেলে জনজীবনে সংকটও দেখা দেয়। দারিদ্র্য বিমোচনকেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। গত ১০ বছরে এ সূচকে অনেক উন্নতি হলেও এখনো ৩ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। এটা দেশের জন্য সুখকর নয়। দারিদ্র্য বিমোচনের বার্ষিক হারও কমে গেছে, যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ গত ১০ বছরে একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে; এ বিষয়টিও জাতির জন্য হতাশাজনক। কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলগুলোকে এ ব্যাপারে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ অবস্থান নিতে হবে। ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নও সময়ের দাবি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলগুলো কেন্দ্রীভূত উন্নয়নের বদলে তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেবে এমনটিও কাক্সিক্ষত। শুধু ঢাকা বা বিভাগীয় শহরকেন্দ্রিক উন্নয়ন না করে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। গ্রাম ও মফস্বল শহরে কর্মসংস্থানের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এসব বিষয় নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্ব পাওয়া উচিত। এ ছাড়া শেয়ারবাজার, বাংলাদেশ ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট ঘোষণাও থাকা উচিত নির্বাচনী অঙ্গীকারে। গত ১০ বছরে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। কিন্তু সে হারে কর্মসংস্থান হয়নি। এ বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আয়বৈষম্য যাতে কমে সে দিকনির্দেশনা প্রতিটি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকতে হবে। দেশের মানুষের কল্যাণেই রাজনীতি। সে উদ্দেশ্য পূরণে অর্থনীতি-বান্ধব রাজনীতির বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে। গণতন্ত্রচর্চার শ্রীবৃদ্ধি ঘটিয়ে হরতাল ও নৈরাজ্যের রাজনীতির চির-অবসান ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর