বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ইয়াজিদ

মাবিয়া মৃত্যুর আগেই তার ছেলে ইয়াজিদকে খেলাফতের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে গিয়েছিলেন। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে মাবিয়ার মৃত্যু হলে ইয়াজিদ তদস্থলে অভিষিক্ত হন। ইয়াজিদের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে মদিনায় আগে থেকেই মতবিরোধ চলছিল। সিংহাসনে আরোহণ করে ইয়াজিদ তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে অস্বীকৃত ব্যক্তিদের কাছে আনুগত্যের দাবি জানিয়ে পত্র প্রেরণ করলেন। হজরত আবুবকরের ছেলে আবদুর রহমান ও হজরত ওমরের ছেলে আবদুল্লাহ ইয়াজিদের আনুগত্য প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে মেনে নিলেন; কিন্তু খেলাফতের অন্যতম দাবিদার আবদুল্লাহ বিন জুবাইর ও ইমাম হাসানের ভাই হোসাইন ইয়াজিদের প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। আবদুল্লাহ বিন জুবাইর খেলাফত লাভের আশা পোষণ করলেও হোসাইনের জন্য তিনি তার বাসনা প্রকাশ করেননি। তারা দুজন মদিনা ত্যাগ করে মক্কায় চলে যান। হোসাইন ছিলেন ন্যায়নিষ্ঠ, সৎ ও অকপট। তিনি বীরত্ব, উদারতা ও ধর্মনিষ্ঠার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ইন্দ্রিয়পরায়ণ, নীতিজ্ঞানহীন পাপাসক্ত ইয়াজিদের কাছে তিনি জীবনের বিনিময়েও মস্তক অবনত করতে রাজি ছিলেন না।

মাবিয়া ইমাম হাসানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির অবমাননা করে স্বীয় ছেলে ইয়াজিদকে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মাবিয়ার চুক্তিভঙ্গ ও ইন্দ্রিয়পরায়ণ ইয়াজিদকে খলিফা পদে মনোনয়নদান নীতিগতভাবে  হোসাইন মেনে নিতে পারলেন না। অধিকন্তু, বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রকে ইমাম  হোসাইন স্বীকার করতে পারেননি। তাই ইয়াজিদের প্রতি তিনি তার আনুগত্য অস্বীকার করেছিলেন। রাজক্ষমতায় আসীন উমাইয়া শাসকদের প্রতি মক্কা ও মদিনার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাদের অনৈসলামিক রীতিনীতি ও পাপাচারপূর্ণ জীবন ধর্মভীরু মুসলমানদের মনে গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। মাবিয়া স্বীয় যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব দ্বারা এ প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে সক্ষম হলেও তার ছেলে ইয়াজিদের সময় এটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

শাকিলা জাহান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর