শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জেগে থাক আশাবাদ

সংঘাত নয় সংলাপই কাম্য

সরকার ও প্রধান বিরোধীদলীয় জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে দুই দফা সংলাপ হলেও সত্যিকার অর্থে অর্জন খুবই সীমিত। তবে ইতিবাচক দিক হলো দুই পক্ষই সংলাপকে ব্যর্থ বলতে নারাজ। সংলাপ দৃশ্যত শেষ হলেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সদিচ্ছাও দেখিযেছে দুই পক্ষ। বুধবার দুই পক্ষের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে সৌহার্দ্যরে মধ্য দিয়ে। সংলাপে পক্ষদ্বয় স্ব স্ব অবস্থানে অনড় থাকলেও সৌজন্যবোধের অভাব ছিল না। সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রাখেন ড. কামাল হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা সরাসরি নাকচ করে দেন। বলেন, সংবিধানের বাইরে তিনি যেতে পারবেন না। সরকার পদত্যাগ করবে না বলেও তিনি সাফ জানিয়ে দেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের দাবি উত্থাপন করে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, সরকারপক্ষ আদালতে বিরোধিতা না করলেই জামিন সম্ভব। এটি আদালতের বিষয় বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করলেও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংলাপ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া যদি আপিল করেন, আদালত যদি তাকে জামিনে মুক্তি দেয়, আমাদের আপত্তি নেই। ঐক্যফ্রন্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার আদলে একজন প্রধান উপদেষ্টাসহ ১০ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাব সংবিধানসম্মত নয় বলে আপত্তি জানান প্রধানমন্ত্রী। তার মতে, সংবিধানের বাইরে সরকার গঠন হলে তৃতীয় কোনো শক্তি ঢুকে পড়তে পারে। এ বিষয়ে তিনি এক-এগারো সরকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। সরকারি দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। জনগণ ভোট দিলে তার সরকার ক্ষমতায় থাকবে। বিরোধী পক্ষকে ভোট দিলে তারাই জিতবেন। সংলাপে দৃশ্যত বড় ধরনের অগ্রগতি না হলেও বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের প্রশ্নে সরকারি দলের নমনীয়তা একটি ইতিবাচক দিক। নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের ফল জানাতে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার যে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন তা স্থগিত করাও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহেরই ইঙ্গিত। একইভাবে ঐক্যফ্রন্টের রোডমার্চ স্থগিত করার ঘটনাও নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। আমরা আশা করব, সংঘাত এড়াতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে দুই পক্ষই সুমতির পরিচয় দেবে; যা সময়েরই দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর