শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডলার সংকট

মুদ্রাবাজারে নজর রাখা জরুরি

আমদানিনির্ভর অর্থনীতি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে বাড়তি চাপের মুখে ফেলছে। বিশেষ করে জ্বালানি গ্যাসের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি বাবদ প্রতি মাসে বাড়তি ব্যয় হচ্ছে ১০ কোটি ডলার। পাশাপাশি বাড়ছে ভোগ্যপণ্য আমদানি। এমন সব কৃষিপণ্য আমদানি হচ্ছে, যা আমদানির কোনো যৌক্তিকতাই নেই। বিলাসপণ্য আমদানিতে লাগাম না থাকায় তা ডলার সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিল্প স্থাপনে অথবা রপ্তানিনির্ভর শিল্পের প্রয়োজনে যেসব পণ্য আমদানি হচ্ছে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানিকারকদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিচ্ছে ত্রিশঙ্কু অবস্থা। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সৃষ্টির পেছনে কোনো কোনো ব্যাংকের ভূমিকাও অনেকাংশে দায়ী। ডলার সংস্থান না করেই বিপুল অঙ্কের আমদানি ঋণপত্র খোলায় এর দায় পরিশোধে তারা বাজার থেকে বেশি দরে ডলার কিনছে। এ ব্যাপারে নয়টি ব্যাংককে শোকজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ৩১ অক্টোবর শোকজের জবাবও দিয়েছে সংশ্লি­ষ্ট ব্যাংকগুলো। তবে সে জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ব্যাংক কোম্পানি আইন ১০৯ ধারার ক্ষমতাবলে ব্যাংকগুলোকে জরিমানা করার সুপারিশ করা হয়েছে। যে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে। প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যয় বৃদ্ধির পরিণতিতে তা কমতে কমতে ৩ হাজার ২১৭ কোটি ডলারে নেমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের ১১২ কোটি ৯০ লাখ ডলার দায় পরিশোধের পর তা আরও হ্রাস পেয়েছে। অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ঠেকাতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধির স্বার্থেই বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সরকারকে সংযমী হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। বিশেষত ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। দেশের ভোগ্যপণ্য তেল, চিনি, ডাল, গম এমনকি চালের একাংশ আমদানিনির্ভর। ডলারের দাম বৃদ্ধি পেলে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায় এবং জন-অসন্তুষ্টির কারণ ঘটায়; যা এড়াতে মুদ্রাবাজারের দিকে তীক্ষè নজর রাখা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর