রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আর কত সড়ক দুর্ঘটনা

শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় যত্নবান হতে হবে

সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের দেশে প্রতিদিনই ঘটছে এবং বছরে এতে হতাহত হচ্ছে ২০ সহস্রাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালে দেশের ছয় জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে ইতালি প্রবাসী এক যুবক ও তার স্ত্রীও রয়েছে। দুনিয়ার যেসব দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া এ দেশে সত্যিকার অর্থেই দুষ্কর। কারণ দুর্ঘটনার এক উল্লে­খযোগ্য অংশ সম্পর্কে থানায় কোনো অভিযোগ নথিভুক্ত হয় না। পত্রপত্রিকায়ও এ সংক্রান্ত সব খবর প্রকাশিত হয় না নানা সীমাবদ্ধতার কারণে। তারপরও যে তথ্য-উপাত্ত জনসমক্ষে প্রকাশ পায় তা উদ্বেগজনক। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কড়া আইন প্রণয়ন সত্ত্বেও তা কিছুতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। বলা যায়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার নামে ধারাবাহিক হত্যাকা- ঘটছে নির্বিচারে। ইরাক, ইয়ামেন সিরিয়া বা আফগানিস্তানের ভয়াবহ যুদ্ধের চেয়ে বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা কোনো অংশে কম নয়। এ নীরব হত্যাকা- প্রতিদিন ঘটলেও গণমাধ্যম, সুশীলসমাজ এমনকি সরকার সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে এটি দিন দিন গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ করেও বিচার পাওয়া যায় না। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণত্রুটি, ট্রাফিক আইন না মানাসহ বিভিন্ন কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনায় প্রতি বছর গড়ে যে ২০ হাজার মানুষ হতাহত হচ্ছে, তাদের পরিবারের জন্য অপ্রত্যাশিত যে ট্র্যাজেডি আচমকা হানা দিচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। তারপরও এ বিষয়ে সম্বিত না ফেরার প্রবণতা মেনে নেওয়া যায় না। সড়ক দুর্ঘটনার সিংহভাগই ঘটছে চালক এবং পথচারীদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে। ট্রাফিক আইন না মানা যেন জাতীয় ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হয়েছে। এগুলো দেখার দায়িত্ব যাদের তারাও আইন মান্যের ব্যাপারে আন্তরিক নয়। সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টেনে ধরতে হলে সংশ্লি­ষ্ট সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় যত্নবান হতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর