সোমবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনী উৎসব

সব দলের অংশগ্রহণ অভিনন্দনযোগ্য

নির্বাচনের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের দুর্বলতা একটি সুবিদিত বিষয়। জাতীয় নির্বাচন হোক আর স্থানীয় নির্বাচন হোক ভোটযুদ্ধকে কেন্দ্র করে উৎসবী মেজাজে মেতে ওঠে বাংলাদেশের মানুষ। ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির হারও পশ্চিমা দুনিয়ার যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি। শিক্ষাদীক্ষা ও অর্থনৈতিক সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকলেও নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে এ দেশের মানুষ যে এগিয়ে তা স্বীকার করতেই হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যে উৎসবী হাওয়া বইছে তা এককথায় নজিরবিহীন। দশম সংসদ নির্বাচনে এ উৎসবের ছিটেফোঁটা ছিল না বিরোধীদলীয় জোট নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। ভোটারদের ভোট বুথ থেকে দূরে রাখতে তারা হরতাল, পেট্রলবোমা তথা আগুন সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়। ফলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশজুড়ে যে নির্বাচন হয় তাতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পূরণ হলেও জনগণকে বঞ্চিত রাখা হয় ভোট উৎসব থেকে। উৎসবের বদলে যে কোনো সময় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত থেকেছেন ভোটাররা। পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ সংসদ নির্বাচনে সে আশঙ্কা না থাকায় গ্রামগঞ্জ শহর নগর সর্বত্রই বইছে ভোটের হাওয়া। সরকারি দলের পাশাপাশি একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সক্রিয় ভূমিকা গণতন্ত্র চর্চার পথ যেমন বিকশিত করবে তেমন সুশাসন প্রতিষ্ঠারও সুযোগ সৃষ্টি হবে। দশম সংসদে খাতাপত্রে বিরোধী দলের অবস্থান থাকলেও তারা একই সঙ্গে ছিল সরকারেরও অংশ। এই দ্বৈত ভূমিকা জনস্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার থাকার দায়িত্ব পালনে ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। বিরোধী দলের হিজ মাস্টার্স ভয়েস সুলভ আচরণ সংসদের প্রতি দেশের মানুষের আকর্ষণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করবে। এ বছর কয়েক কোটি নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট প্রদানের সুযোগ পাবেন। নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণে নতুন প্রজম্মে র চিন্তাভাবনা প্রভাব বিস্তার করবে বলেও আমাদের বিশ্বাস। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। এ স্থিতিশীলতা টেকসই হতে পারে গণতন্ত্র অনুশীলনের মাধ্যমে।  নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ সে প্রত্যাশা  পূরণ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর