সোমবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচল

সুব্যবস্থাপনাও নিশ্চিত করুন

দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়েছে। এ ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে পঞ্চগড়বাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো। স্বভাবতই দেশের প্রত্যন্ত জনপদ পঞ্চগড়ে এখন বইছে আনন্দের বন্যা। উদ্বোধনের পর থেকে ট্রেন স্টেশনে জমে উঠেছে হাজারো মানুষের ভিড়। শনিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে দেশের দীর্ঘতম রেলপথের পঞ্চগড় স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় দ্রুতযান এক্সপ্রেস। ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের আওতায় পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার রেললাইনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে কাজের সূচনা করেন। রেললাইনের কাজ শেষ হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালের ১৭ জুন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক দিনাজপুর পর্যন্ত একটি ইন্টারসিটি শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন। পরে এ নিয়ে স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আন্দোলন শুরু করে। তারা সরাসরি ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচলের দাবি তোলেন। গত বছরের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ের এক জনসভায় এ দাবি সংবলিত ব্যানার দেখতে পেয়ে তার বক্তব্যে বলেন, ব্যানার নামিয়ে ফেলুন পঞ্চগড়ে ট্রেন যাবে। তারপর থেকে শুরু হয় ঢাকা-পঞ্চগড় সরাসরি ট্রেন চলাচলের প্রক্রিয়া। দেশের এই দীর্ঘতম রেলপথ পঞ্চগড়কে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যেমন যুক্ত করেছে তেমনি তা ধারেকাছের দেশগুলোতেও সরাসরি রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আশা করা হচ্ছে পঞ্চগড় থেকে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে ভবিষ্যতে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট সব দেশই উপকৃত হবে। বর্তমান সরকারের আমলে রেল যোগাযোগের সুদিন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে এটি একটি প্রশংসনীয় দিক। তবে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার যে দীর্ঘ ঐতিহ্য রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে বিদ্যমান, তা থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে দৃষ্টিগ্রাহ্য সাফল্য এখনো অর্জিত হয়নি। রেল চলাচলকে লাভজনক করতে রেল যোগাযোগে সুব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক সময়ে ট্রেন ছাড়া এবং সম্ভাব্যস্থলে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।  এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর