বিশ্বের নেতৃস্থানীয় গণমাধ্যমে লন্ডনভিত্তিক সাপ্তাহিক দি ইকোনমিস্ট আওয়ামী লীগের দুই মেয়াদে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইকোনমিস্টের এ মন্তব্যকে ক্ষমতাসীন দলের জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে। অর্থ ও অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্বনন্দিত এ সাপ্তাহিক বলছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে সে কারণেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের ‘কঠোরতার’ ওপর নির্ভর না করলেও চলবে। ‘নির্বাচনের আগে হঠাৎ নমনীয় ক্ষমতাসীন দল’-এ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করছে ইকোনমিস্ট। বলা হয়েছে, এক সপ্তাহ আগেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে মানুষের চিন্তাভাবনা অন্যরকম ছিল। ইকোনমিস্টের মূল্যায়ন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। গত এক দশকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল গড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। গত বছর তা ভারত ও পাকিস্তানকেও ছাড়িয়ে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে। মোট দেশজ উৎপাদনেও বাংলাদেশ অনেকখানি এগিয়ে গেছে। শিশুমৃত্যুর হার কমানো এবং মাধ্যমিকে ভর্তির হার, গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ অনেক দিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। নির্বাচন সামনে রেখে সংঘাত এড়িয়ে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনায় বসার প্রশংসা করে ইকোনমিস্ট বলেছে, বাংলাদেশে কোনো বিরোধই সংসদে আলোচনা বা ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে সমাধান হয় না, তা হয় দেশ অচল করে দেওয়া হরতাল-অবরোধে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতায় শুধু ভোট গ্রহণের দিন নিহত হয় ১৮ জন। ১০০-এর বেশি ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। বিরোধীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত হরতাল বা অবরোধ ডাকার লক্ষণ দেখা যায়নি। সংঘাত এড়াতে আলাপ-আলোচনার প্রবণতাকে ইতিবাচক হিসেবে অভিহিত করেছে পত্রিকাটি। বলেছে, এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরও ত্বরান্বিত হবে। আমাদের বিশ্বাস, ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তিকে সংঘাতের বদলে সমঝোতার পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করবে; গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে যার বিকল্প নেই।