বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

প্রতিশ্রুতি পালনে মিয়ানমার অটল থাকুক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুরু হচ্ছে আজ। প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আপত্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং চীনের সহযোগিতা ও আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে। জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো রোহিঙ্গাদের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা এবং পুনর্বাসনের যথাযথ প্রস্তুতি নিশ্চিত করে প্রত্যাবাসন শুরু করার পক্ষে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের মতভিন্নতা না থাকলেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে গেলে কবে নাগাদ শুরু করা সম্ভব হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বাংলাদেশ কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জড়িত হতে চায় না বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বন্ধু দেশ চীন ও ভারতের ভূমিকাকে যৌক্তিক কারণেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইনের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশ মিয়ানমার জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মাধ্যমে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসারে প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, নৌপথে আজ থেকে একটানা ১৫ দিন রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচের ২ হাজার ২৬১ জন মিয়ানমারে ফিরে যাবে। কক্সবাজারের একাধিক শিবির থেকে প্রতিদিন ১৫০ জন করে রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার। জোয়ার-ভাটার ওপর এ সংখ্যা ও তাদের যাওয়ার সময় নির্ভর করবে। ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের বসবাসের জন্য ভারত সরকার রাখাইন রাজ্যে ২৮৫টি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে। আর চীন সরকার ১ হাজার বাড়ির কাঠামো পাঠিয়েছে, যেগুলো সংযোগ করলেই পূর্ণ বাড়িতে রূপ নেবে। রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশে টেকনাফের কেরুনতলী ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে পৃথক দুটি অন্তর্বর্তীকালীন শিবির তৈরি করা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের যে প্রক্রিয়া আজ শুরু হচ্ছে তা যাতে থেমে না যায় সে ব্যাপারে মিয়ানমারকে যতœবান হতে হবে। আমরা আশা করব, নিজেদের জাতীয় ঐক্য সুসংহত করা এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের স্বার্থে মিয়ানমার প্রত্যাবাসনসংক্রান্ত তাদের প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর