বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হিংসা নেক আমল ধ্বংস করে

যুবায়ের আহমাদ

হিংসা নেক আমল ধ্বংস করে

মানবচরিত্রে খারাপ দিকগুলোর অন্যতম হলো হিংসা। অন্যের সুখ-শান্তিতে ব্যথিত হয়ে তা দূর হওয়ার আকাক্সক্ষা পোষণ করাই হিংসা। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা অন্যের ভালো কিছু মেনে নিতে পারে না। অন্যের ভালো দেখলে মন খারাপ হয়। এটাই হিংসা। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাজকে বিষময় করে তোলে। হিংসা এমনই মারাত্মক হয়ে ওঠে যে, এর ফলে সমাজজীবনে হত্যাকা- পর্যন্ত ঘটে যায়। হিংসা সামাজিক জীবনে অশান্তির অন্যতম বড় কারণ হওয়ায় এ থেকে মুক্ত থাকার লক্ষ্যে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে নির্দেশনা দিয়েছেন আল্লাহ। ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি... এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে (পানাহ চাই), যখন সে হিংসা করে।’ সূরা ফালাক। যার প্রতি হিংসা করা হয় তার এতে কোনো ক্ষতি হওয়া নিশ্চিত না হলেও যে হিংসা করে তার ক্ষতি নিশ্চিত। তার প্রথম ক্ষতি হলো তার নেক আমলগুলো অন্যের প্রতি হিংসা করার কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা হিংসা পুণ্যকে এমনভাবে বিনষ্ট করে দেয়, যেভাবে আগুন কাঠকে ভস্মীভূত করে দেয়।’ আবু দাউদ। যার প্রতি হিংসা করা হবে তার জন্য আল্লাহ যে উন্নতি ও কল্যাণ নির্ধারণ করে রেখেছেন তা তিনি পাবেনই। হিংসাকারী ওই ব্যক্তির প্রতি হিংসা করে তার কল্যাণ ঠেকাতে পারবে না। বরং হিংসা করার কারণে হিংসাকারীরই ক্ষতি হবে। তার নিজের নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ বিভিন্ন নেক আমলের সওয়াব অন্যের প্রতি হিংসা করার কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে। হিংসার দ্বিতীয় ক্ষতি হলো, হিংসাকারী আল্লাহর ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হবে। হিংসা-বিদ্বেষের কঠিন পরিণতি সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘প্রতি সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার মানুষের আমলগুলো পেশ করা হয় এবং সব মুমিন বান্দার গুনাহখাতা মাফ করে দেওয়া হয়; কিন্তু যাদের পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষ ও দুশমনি আছে, তাদের ক্ষমা করা হয় না। তাদের সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, তাদের ছেড়ে দাও, যেন তারা ফিরে আসে অর্থাৎ মিলে যায়।’ মুসলিম।

লেখক : জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি ও খতিব, বাইতুশ শফীক মসজিদ বোর্ডবাজার, গাজীপুর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর