শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান

পুষ্টি চাহিদা মেটাতে অবদান রাখুক

বাংলাদেশের মানুষের গড় উচ্চতা ধারেকাছের দেশগুলোর তুলনায় কম। বিশেষত নারীদের মধ্যে খর্বাকৃতির সংখ্যাই বেশি। জিঙ্কের অভাবে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষের জন্য খর্বাকৃতি নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশার কথা, এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছেন। এর ফলে ভাতের সঙ্গেই মিলবে পুষ্টি উপাদান জিঙ্ক। স্মর্তব্য, বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪৪ শতাংশ শিশু জিঙ্কস্বল্পতায় ভুগছে। আবার বিভিন্ন বয়সী ৫৭ শতাংশ নারীর রয়েছে জিঙ্কস্বল্পতা। ১৫ থেকে ১৯ বছরের শতকরা ৪৪ ভাগ মেয়ে জিঙ্কের অভাবে খাটো হয়ে যাচ্ছে। উদ্ভাবিত ধানে অধিক পরিমাণ জিঙ্ক থাকা সত্ত্বেও ভাতের স্বাদ ও রঙের তারতম্য হবে না। বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট জিঙ্কসমৃদ্ধ যে বিনা ধান-২০ উদ্ভাবন করেছে এর চালের রং লালচে ও বাদামি এবং ১ কেজি চালে ২৬ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক রয়েছে। এ জাতটির চাষাবাদ উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদের মতোই। বিইউ হাইব্রিড ধান-১ নামে আরেক জাতের উদ্ভাবিত ধানে রযেছে মানবদেহের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় আয়রন ও জিঙ্ক। সুগন্ধি গুণসম্পন্ন এই ধানের প্রতি কেজি চালে ২২ মিলিগ্রাম জিঙ্ক রয়েছে। রোপা আমন মৌসুমের জন্য দুটি জিঙ্কসমৃদ্ধ জাত ব্রি ধান-৬২ ও ব্রি ধান-৭২ উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। ব্রি ধান-৬২-এর প্রতি কেজি চালে প্রায় ২০ মিলিগ্রাম জিঙ্ক রয়েছে। ব্রি ধান-৭২-এর প্রতি কেজি চালে জিঙ্ক রয়েছে ২২ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম। জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের আবিষ্কার দেশবাসীর পুষ্টি চাহিদা পূরণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল ধানের সঙ্গে পরাগায়ণ ঘটিয়ে জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। আমাদের মতে, এ ধান চাষে কৃষক যাতে আগ্রহী হয়ে ওঠে তা নিশ্চিত করতে আরও নিবিড় গবেষণাসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।  আবিষ্কৃত ধান যাতে আরও উচ্চ ফলনশীল জাতে রূপান্তর করা যায় সে বিষয়ে নজর দেওয়া হবে। দেশবাসীর পুষ্টি চাহিদা পূরণে মূল্যবান আবিষ্কারের জন্য দেশের সংশ্লি­ষ্ট বিজ্ঞানীদের  প্রতি আমাদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর