মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শ্রেষ্ঠ ও আখেরি নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

মাওলানা আবদুর রশিদ

প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন প্রকৃতপক্ষে মানুষের নবী। মানুষকে তিনি এত গভীরভাবে ভালোবাসতেন যার কোনো তুলনা নেই। সব অবস্থায় মানুষের সুখ-দুঃখের ভাগী হতেন তিনি। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে অন্ধকারাচ্ছন্ন এক যুগে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাব ঘটেছিল। আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণকারী এই প্রেরিত পুরুষ তাওহিদি আদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছেন কোটি মানুষের মনে। অন্ধকার থেকে তাদের টেনে এনেছেন আলোর পথে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আল্লাহ মানুষকে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করতে অসংখ্য নবী-রসুল পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তারা বিভিন্ন জাতি বা গোত্রকে আল্লাহর পথে পরিচালিত হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। নবীরা মানুষকে আল্লাহমুখী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণের পথ বাতলে দিয়েছেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সব নবীর সেরা ও শেষ নবী। নবীদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে আল কোরআনে বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সূরা আহজাবের ৪৫ ও ৪৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে নবী! আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহ্বায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।’ কাজেই একজন নবী হচ্ছেন সাধারণ মানুষের কর্মের সাক্ষী, ভালো কাজের সুসংবাদদাতা, মন্দ কাজের ব্যাপারে সতর্ককারী প্রতিনিধি এবং এমন একজন মানুষ যিনি সাধারণ মানুষকে স্রষ্টার দিকে আহ্বান করেন; যা হচ্ছে চূড়ান্ত লক্ষ্য। অন্য এক জায়গায় নবী-রসুলদের লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছে অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর দিকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব পালন। সুতরাং এটা পরিষ্কার, মানব জাতিকে আল্লাহকে চিনতে আহ্বান করা হয়েছে, আর নবী-রসুলরা হচ্ছেন স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগসূত্র। সূরা হাদিদের ২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি নবী-রসুল পাঠিয়েছি সুস্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে কিতাব পাঠিয়েছি ও ন্যায়নীতি যাতে মানুষ ন্যায়বিচারে উদ্বুদ্ধ হয় এবং লোহা পাঠিয়েছি যাতে রয়েছে কঠিন দৃঢ়তা ও মানুষের জন্য কল্যাণ।...’

এ আয়াতে ন্যায়বিচার ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সব নবী-রসুল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং এটা তাদের লক্ষ্যের আরেকটি দিক। হজরত আদম আলাইহিস সাল্লাম থেকে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সব নবী-রসুল মানব সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন।  রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর পৃথিবীতে কোনো নবী ও রসুল অবতীর্ণ হবেন না।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

সর্বশেষ খবর