শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা

মৃত্যুর মিছিল রোধ করুন

সড়ক দুর্ঘটনা যেন এক অভিশাপের নাম। প্রতিদিনই দেশের সড়ক-মহাসড়কে ঝরে পড়ছে এক ডজনেরও বেশি মানুষের প্রাণ। আহতের সংখ্যা তার চেয়ে দ্বিগুণ কিংবা আরও বেশি। যাদের অনেককে সারা জীবন পঙ্গু হয়ে থাকতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে অন্তত ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু সিরাজগঞ্জেই নিহত হয়েছেন সাতজন। সারা দেশে বৃহস্পতিবার যারা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তার আটজনই নারী। সড়ক দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠছে দেশের মানুষ। রাজধানীতে বাসের তলায় পিষ্ট হয়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে সম্প্রতি ফুঁসে উঠেছিল রাজধানীর শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। তার পরও সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার বিকাশ ঘটেনি গাড়িচালকদের মধ্যে। পথচারী ও পরিবহন যাত্রীদের মধ্যে আসেনি সচেতনতা। দুনিয়ার যেসব দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে এগিয়ে। ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোর চেয়ে এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনা গড়ে ২৮ গুণ। প্রতি বছর ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ এ দেশে প্রাণ হারান সড়ক দুর্ঘটনায়। সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে গাড়িচালকদের আনাড়িপনা অনেকাংশে দায়ী। এ দেশে যান্ত্রিক যানবাহন চালানোর জন্য প্রশিক্ষণ নয়, উৎকোচই নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। যেনতেন প্রকারে গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেলে সাত খুনও মাফ হয়ে যায়। যানবাহন চালকদের শক্তিশালী ইউনিয়নের কাছে দেশের সরকার, আইন-আদালত সবকিছু জিম্মি বললেও অত্যুক্তি হবে না। কোনো সভ্য দেশে এ ধরনের অবস্থা অকল্পনীয় হলেও আমাদের দেশে তা ঘটছে। সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরতে হলে শুধু গাড়িচালক নয়, সবার সুমতি ফিরিয়ে আনতে হবে। গাড়িচালক, গাড়ির মালিক, যাত্রী, পথচারী তো বটেই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে যারা নিয়োজিত তাদেরও সুবিবেচনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। বুঝতে হবে কারও না কারোর দায়িত্বহীন আচরণে যে দুর্ঘটনা হয়, তার জের শুধু নিহত বা আহতরা নন, তাদের স্বজনদেরও টানতে হয়। জীবনের এমন অপচয় কারোরই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর