মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সর্বপ্রথম হবে নামাজের হিসাব

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

সর্বপ্রথম হবে নামাজের হিসাব

ইমানের পরে সর্বপ্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো নামাজ। নামাজের মাধ্যমে বান্দা তার মালিকের কাছে চূড়ান্তরূপে আত্মসমর্পণ করে। কিয়াম, রুকু ও সিজদার মাধ্যমে ধাপে ধাপে রাব্বি কারিমের পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে। মহান স্রষ্টার কুদরতি কদমে ললাট রেখে বিলিয়ে দেয় আপন সত্তাকে। নামাজ মিরাজের উপহার ও ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ এবং এর অস্বীকারকারী কাফির। রব্বুল আলামিন আল কোরআনে অন্তত ৮২ বার নামাজের আলোচনা করেছেন। কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব হবে। নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম কর ও জাকাত দাও। আর তোমরা নিজেদের জন্য আগে যে সৎকর্ম পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে।’ সূরা বাকারা, আয়াত ১১০। রব্বুল আলামিন আরও ইরশাদ করেন, ‘আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামাজ কায়েম করুন। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ অবগত।’ সূরা আনকাবুত, আয়াত ৪৫।

হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি ১. এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. জাকাত আদায় করা। ৪. হজ পালন করা। ৫. রমজান মাসে রোজা রাখা।’ বুখারি, মুসলিম। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা বল তো, যদি তোমাদের কারও দরজার সামনে একটি নহর (ঝরনা, প্রস্রবণ বা পুকুর) থাকে জাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তবে তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবিরা বললেন, না, তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকতে পারে না। অতঃপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত এমনই; এর বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা বান্দার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। বুখারি, মুসলিম।

হজরত আলী (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেষ অসিয়ত ছিল ‘নামাজ’, ‘নামাজ’ অর্থাৎ নামাজের প্রতি যত্নবান হও। আর স্বীয় অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। আবু দাউদ। সম্মানিত পাঠক! নিজ সন্তানকে নামাজ শিক্ষা দেওয়া, নামাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করা এবং প্রয়োজনে কঠোরভাবে নির্দেশ প্রদান করা প্রত্যেক মাতা-পিতার নৈতিক ও আবশ্যিক কর্তব্য। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নিজ সন্তানদের সাত বছর বয়স থেকে নামাজের নির্দেশ দাও। আর ১০ বছর বয়সে নামাজ না পড়লে তাদের প্রহার কর এবং বিছানা পৃথক করে দাও।’ আবু দাউদ।

লেখক : মুফাসসিরে কোরআন ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

Email : [email protected]

 

সর্বশেষ খবর