বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

করভীতি দূর করুন

করদাতার সংখ্যাও বাড়াতে হবে

করদানের ক্ষেত্রে দেশবাসীর অনীহা ধীরে ধীরে হলেও অপসৃত হচ্ছে। করদানে এগিয়ে আসছে প্রতি বছরই বিপুলসংখ্যক মানুষ। চলতি করবর্ষে ২০ লাখ ৬ হাজার ৭১৫ ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিল করেছেন। তারা ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে সরকারি কোষাগারে আয়কর জমা দিয়েছেন ২২ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। গত করবর্ষের চেয়ে এবার বাড়তি ২ লাখ ১৩ হাজার করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য জিয়াউদ্দিন মাহমুদ সোমবার সেগুনবাগিচার রাজস্ব ভবনে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য তুলে ধরে বলেছেন, ২০১৭ সালে রিটার্ন দাখিল বাবদ আয় হয়েছিল ১৯ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এ বছর হয়েছে ২২ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল নভেম্বরেই আয় হয়েছে ৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। গত বছর একই মাসে আয় হয়েছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। আয়কর দাতার সংখ্যা বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। সরকার পরিচালনা শুধু নয়, দেশের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় জনগণের দেওয়া কর থেকে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। আনুমানিক হিসাবে দেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ আয়কর দেওয়ার মতো আয় করেন। কিন্তু নানামুখী তৎপরতার পরও মাত্র এক পঞ্চমাংশ অর্থাৎ ২০ লাখ নাগরিককে করদাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আয়কর দেওয়ার যোগ্য সব নাগরিক আয়কর দানে এগিয়ে এলে সরকার যে বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হতো তা দিয়ে প্রতি বছর একটি করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হতো। দেশের নাগরিকদের সিংহভাগ আয়কর দানে উৎসাহী হলেও করবান্ধব পরিবেশের অভাবে অনেকে আয়কর দাতাদের তালিকায় নিজেদের নাম ওঠাতে ভয় পান। নাগরিকদের সিংহভাগ যে পরিমাণ আয়কর দেন তার সমঅংশ ব্যয় হয় রিটার্ন দানের সময় আয়কর আইনজীবী ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের পেছনে। সাধারণ মানুষের করভীতি দূর করতে এসব ব্যাপারে নজর দিতে হবে। আয়কর দাতারা যাতে সরাসরি আয়কর দানে উৎসাহী হন সে বিষয়টি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর