শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল

সময়ের চাহিদা পূরণে যথার্থ উদ্যোগ

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ। শত শত বছর ধরে দারিদ্র্যের অভিশাপে ভোগা এ দেশটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের তান্ডবে। তবে রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতো ভস্ম থেকে উড়াল দেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্ব পরিসরে যে দেশগুলো দ্রুতহারে এগোচ্ছে তারও সামনের কাতারে আমাদের দেশ। ফলে সময়ের চাহিদা মেটাতে পরিবর্তন আসছে দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। নির্মাণ হচ্ছে থার্ড টার্মিনাল। বর্তমানের দুই টার্মিনালের চেয়ে চার গুণ বড় এ টার্মিনাল ভবন বছরে কমপক্ষে ১ কোটি ৬০ লাখ যাত্রী ধারণে সক্ষম হবে। গত ২০ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বানের মধ্য দিয়ে এ টার্মিনাল নির্মাণের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরে যে ধরনের সুবিধা থাকে তার সবই থার্ড টার্মিনালে নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশে আকাশপথে যাত্রীসংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে গড়ে তোলা হবে থার্ড টার্মিনালটি। ২ লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর যে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ হবে তার রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করা হবে মূল টার্মিনালের বর্তমান রানওয়ে; যা পরে সম্প্রসারণ করা হবে। থার্ড টার্মিনালের নকশায় রাখা হয়েছে ২৪টি বোর্ডিং ব্রিজ। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১২টি নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে। বাকিগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী পরে নির্মাণ করা হবে। বোর্ডিং ব্রিজের সঙ্গে থাকবে ১৩টি চেক ইন বেল্ট। পর্যাপ্তসংখ্যক এক্সেলেটর, সাবস্টেশন ও লিফট সংযুক্ত রাখা হবে। থাকবে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন, বহুতল কারপার্ক। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে তৃতীয় টার্মিনাল ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬১০ কোটি ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। জাইকা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ নিঃসন্দেহে এক সময়োপযোগী উদ্যোগ। তবে ভবিষ্যতের কথা ভেবে দেশে আরও বড় মাপের বিমানবন্দর তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য উপযুক্ত স্থান নির্ণয়ে এখনই তৎপর হতে হবে।

সর্বশেষ খবর