বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এলপি গ্যাস জালিয়াতি

প্রতারকদের আইনের আওতায় আনুন

একশ্রেণির প্রতারক ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে দেশের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) খাত অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। প্রতারকরা নামিদামি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিলিন্ডার সংগ্রহ করে তাতে এলপি গ্যাস রিফিল করে বাজারে বিক্রি করছে। এর ফলে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সুনামও জিম্মি হয়ে পড়ছে। দুই দশক আগে ১৯৯৭ সালে সীমিত আকারে এলপি গ্যাস আমদানির মাধ্যমে সরকার সাধারণ মানুষের কাছে বিকল্প এ জ্বালানি পৌঁছে দেয়। ২০১০ সালের দিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ করে দিলে এলপি গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে এলপি গ্যাস আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সময় মাত্র ৮০ হাজার টন থেকে চাহিদা বেড়ে বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির এ সুযোগে গড়ে উঠেছে কিছু অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান। তারা গ্যাস আমদানি না করেও কৌশলে নামিদামি প্রতিষ্ঠানের সিলিন্ডার সংগ্রহ করে অবৈধভাবে গ্যাস রিফিলিং করে বাজারজাত করছে। মান নিয়ন্ত্রণ না করা ও ওজনে কম দেওয়ার কারণে এ বিষয়ে দেরিতে হলেও সরকারের টনক নড়ে। বাসাবাড়িতে অনিরাপদ ও নিম্নমানের সিলিন্ডার সরবরাহের পরিণতিতে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনাও বাড়তে থাকে। বিষয়টি সরকারের নজরে এলে প্রকৃত গ্যাস আমদানিকারকদের সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়। সরকারের এ নির্দেশনার পর আমদানিকারকরা সতর্ক হলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে অসাধু চক্রটি। প্রতারণার সঙ্গে জড়িত কিছু প্রতিষ্ঠান নিজেরা কোনো এলপি গ্যাস আমদানি না করে আমদানিকারকদের কাছ থেকে গ্যাস কিনে তা নামি প্রতিষ্ঠানের শূন্য সিলিন্ডারে রিফিল করে বাজারজাত করছে। সাধারণত ১২ কেজির সিলিন্ডারে তারা ১০ কেজি গ্যাস দেয়। দামে কম হওয়ায় ক্রেতারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সহজে। যেসব এলাকায় অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে সেসব এলাকায় নামিদামি প্রতিষ্ঠানের গ্যাস যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাঁকা পথের আশ্রয় নেয় প্রতারকরা। অবৈধভাবে বাজারজাত করা এসব এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে ইতিমধ্যে বেশকিছু দুর্ঘটনাও ঘটেছে। জনস্বার্থে এলপি গ্যাসের অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সরকার কড়া পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর