সোমবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিরোধী দলে জাতীয় পার্টি

সংসদীয় গণতন্ত্র শক্তিশালী হোক

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের হয়ে নির্বাচন করলেও সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল জাতীয় পার্টি সরকারের যোগ দেওয়ার বদলে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পার্টি চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইতিমধ্যে চিঠি দিয়ে তার দলের এ সিদ্ধান্ত স্পিকারকে জানিয়ে দিয়েছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে মহাজোটভুক্ত দলগুলো সংসদের ২৮৮টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জিতেছে সাতটি আসনে। মহাজোটের ২৮৮টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টির আসন সংখ্যা ২২টি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে দলটি যেহেতু নির্বাচন করেছে সেহেতু তারা সরকারের সঙ্গে যোগ দিলে মাত্র সাত আসনের বিরোধী দল সংসদকে কতটা প্রাণবন্ত করে রাখতে পারবে তা নিয়ে সংশয় কম নয়। জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থাকলে সে অবস্থার অবসান ঘটবে। দশম জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করায় তাদের পরিচিতির যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তা এড়ানো সম্ভব হবে। সংসদে কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারলে দেশবাসীর কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে এমনটিই আশা করা যায়। সংসদীয় রাজনীতিতে শক্তিশালী বিরোধী দলের কোনো বিকল্প নেই। বিরোধী দলের অবস্থান শক্তিশালী হলে সরকারও দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ অনুভব করে। সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যার কোনো বিকল্প নেই। জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে যোগ দিলে জাতীয় রাজনীতিতে সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হবে। গণতন্ত্রের জন্যও এ সিদ্ধান্ত বিবেচিত হবে আশীর্বাদ হিসেবে। আমরা আশা করব বিরোধী দলে ভূমিকা রাখার সিদ্ধান্তই শুধু নয় সংসদকে জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার জন্যও জাতীয় পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হবেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাকে এগিয়ে নিতে তারা তাদের মেধা ও মননশীলতা কাজে লাগাবার চেষ্টা করবেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার ও বিরোধী দল মুদ্রার দুই পিঠ। দুই পিঠকে উজ্জ্বল রাখতেই বিরোধী দলে যোগদানের যে সময়োচিত সিদ্ধান্ত জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে, আমরা তাকে স্বাগত জানাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর