শিরোনাম
বুধবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

গোনাহের জন্য মাফ চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করেন

মুহম্মদ ওমর ফারুক

গোনাহের জন্য মাফ চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করেন

মানুষ গোনাহ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে দয়ালু আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। কারণ আল্লাহ দয়ালু ও ক্ষমাশীল। মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্ট জীবের প্রতি তাঁর মমতার কোনো তুলনা নেই। মানুষকে আল্লাহ পৃথিবীতে তাঁর খলিফার মর্যাদা দিয়েছেন। এটি মহান আল্লাহর অসীম কৃপারই উদাহরণ। মানুষের বৈশিষ্ট্য হলো সে ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। নবী বা রসুলরা আল্লাহর মহিমায় মানবিক দোষত্রুটি ও পাপ থেকে মুক্ত থাকলেও অন্যদের সে সুযোগ নেই। প্রতি পদে শয়তানের পাতা ফাঁদ এড়িয়ে তাকে চলতে হয়। অনেক সময় সে ধোঁকায় পড়ে গোনাহ করে বসে।

মানুষের ভরসা হলো আল্লাহর দয়ার কোনো সীমা নেই। তিনি অসীম ক্ষমাশীল। বান্দার অপরাধ যত বড়ই হোক না কেন তা আল্লাহর কৃপা ও ক্ষমার তুলনায় তুচ্ছ। তিনি চাইলেই বান্দাকে ক্ষমা করতে পারেন। আল্লাহ মানুষের জন্য তাঁর ক্ষমার দরজা সর্বদা উন্মুুক্তও রেখেছেন। সূরা নিসার ১১০ নম্বর আয়াতে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, ‘গোনাহ বা নিজের অনিষ্ট করার পর যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবে পেয়ে থাকে।’ সূরা মুমিনের ৬০ নম্বর আয়াতেও আল্লাহ রব্বুল আলামিন মানুষকে তাঁর কাছে খাস দিলে ক্ষমা প্রার্থনার তাগিদ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘তোমরা আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তা কবুল করব।’

আল্লাহ করুণাময়। তিনি চান বান্দা তাঁর কাছে দোয়া করুক। তিনি বান্দার প্রার্থনার জন্য উন্মুখ থাকেন। তবে আল্লাহর কাছে মানুষকে কায়মনোবাক্যে নিজের বাসনার কথা জানাতে হবে। এই বিশ্বাসে বলীয়ান থাকতে হবে যে, আল্লাহ তার মনোবাসনা পূর্ণ করবেন। আল্লাহর কাছে মনোবাঞ্ছা পেশ করার ব্যাপারে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা আল্লাহর কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করবে তখন তোমরা দৃঢ়বিশ্বাস রাখবে যে, আল্লাহ তা কবুল করবেন। আল্লাহ এতই দয়ালু যে, তিনি কায়মনোবাক্যে করা প্রার্থনা কবুল করেন। এর মধ্যে কোনো প্রার্থনা তৎক্ষণাৎ কবুল হয়, আবার কোনো প্রার্থনা কবুল হয় বিলম্বে। এমনকি কোনো প্রার্থনার জাগতিক সুফল না পাওয়া গেলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পরকালে অর্থাৎ জাগতিক জীবনের পর যে অনন্ত জীবন তাতে ওই প্রার্থনার সুফল সংযোজিত হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, হে আমার বান্দারা! দুনিয়ার জীবনে তোমরা যে প্রার্থনা করেছিলে আমি তা তৎক্ষণাৎ কবুল করিনি, তোমাদের সেই প্রার্থনা আমি কুদরতি হাতে জমা রেখেছিলাম, আজ তার বিনিময়ে সওয়াব নিয়ে যাও।’ বলা বাহুল্য, কিয়ামতের দিন সওয়াব অর্জনই হবে দুনিয়ার জীবনের সব অর্জনের চেয়ে বেশি মূল্যবান।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর