মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফজর ও এশার বিশেষ ফজিলত

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

ফজর ও এশার বিশেষ ফজিলত

নামাজ হলো আল্লাহর কাছে বান্দার সবচেয়ে চেয়ে পছন্দনীয় ইবাদত। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা সবার জন্যই অবশ্যপালনীয় বা ফরজ ইবাদত। এর মধ্যে ফজর ও আসর নামাজের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একদা আমরা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। পূর্ণিমার চাঁদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে তিনি উপস্থিত সাহাবিদের বললেন, তোমরা আল্লাহকে এরূপ স্পষ্টভাবে কোনো রকম ভিড় ও কোলাহল ছাড়াই দেখতে পাবে, যেমন এই পূর্ণিমার চাঁদ দেখছ। কিন্তু এই নিয়ামত হাসিলের জন্য সূর্যোদয় ও অস্তের পূর্ববর্তী নামাজদ্বয়ের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’ বুখারি।

হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কেউ যদি এশা ও ফজরের জামাতে উপস্থিত না হতো, তবে আমরা মনে মনে ভাবতাম, হয়তো সে মুনাফিক হয়ে গেছে।’ বাজজার, তাবারানি, ইবনে খুজায়মা

আমরা যদি আল্লাহর দিদার লাভ করতে চাই তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। নামাজের জামাতে শামিল হওয়ার ব্যাপারে এশা ও ফজর নামাজের জামাতের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কেননা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এ দুটি নামাজ (এশা ও ফজর) মুনাফিকদের জন্য খুবই কষ্টকর। এ নামাজ দুটি জামাতে আদায় করায় কত যে পুণ্য রয়েছে তা যদি লোকেরা জানতে পারত, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তা আদায় করতে আসত।’ বুখারি, মুসলিম।

শায়খ উবায়দুল্লাহ বিন উমার কাওয়ারিরি (রহ.) বলেন, ‘এশার নামাজ জামাতে পড়তে আমার কখনো ভুল হয়নি। এক রাতে আমার বাড়িতে এক মেহমান এলেন। তার আপ্যায়নে ব্যস্ত থাকায় এশার জামাতে শামিল হতে পারলাম না। আমি বসরা নগরীর সব মসজিদে তালাশ করে দেখলাম, সবাই এশার নামাজ পড়ে মসজিদগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। যেহেতু হাদিসে আছে একাকী নামাজের চেয়ে জামাতের নামাজে ২৭ গুণ সওয়াব। তাই বাড়ি ফিরে আমি ২৭ বার এশার নামাজ পড়লাম। রাতে স্বপ্নে দেখলাম, আমি এক ঘোড়সওয়ার দলের সঙ্গে ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতা করছি এবং সবার পেছনে পড়ে যাচ্ছি। তাদের একজন বলল, তুমি আমাদের কখনই ধরতে পারবে না। কেননা আমরা এশার নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করেছি, আর তুমি একাকী আদায় করেছ।’ উপরোক্ত হাদিসগুলোর আলোকে জামাতে নামাজ আদায় করা বিশেষ করে ফজর ও এশার নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। আমরা যাতে শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করতে পারি সে ব্যাপারে আল্লাহর সাহায্য কামনা করছি। তিনি অসীম দাতা এবং বড়ই মেহেরবান।  আল্লাহ আমাদের জামাতে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর