সোমবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যভিচার থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহম্মাদ জিয়াউদ্দিন

হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইমান হচ্ছে একটি সুন্দর পোশাক, আল্লাহপাক যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তা পরিয়ে দেন। কিন্তু যখন কেউ ব্যভিচার করে, আল্লাহ তখন তার গা থেকে ইমানের পোশাক খুলে নেন। অতঃপর যদি সে তওবা করে তবে আল্লাহ তাকে আবার উক্ত পোশাক ফিরিয়ে দেন।’ -রায়হাকি, আবু দাউদ, তিরমিযি ও হাকেম। রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! তোমরা ব্যভিচার থেকে পরহেজ কর। কেননা এর ছয়টি খারাপ পরিণতি রয়েছে। যার তিনটি ইহলোকে এবং তিনটি পরলোকে সংঘটিত হবে। ইহলোকের তিনটি হচ্ছে, তার চেহারার সৌন্দর্য লোপ পায়, তার আয়ু হ্রাস পায় এবং চিরকাল সে দরিদ্রতার ভিতর থাকবে। পারলৌকিক তিনটি হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তুষ্টি, কঠিন হিসাব এবং জাহান্নামের শাস্তির সম্মুখীন হবে।’ - ইবনে জাওযি।

নবী পাক (সা.) বলেন-‘ইবলিস শয়তান তার শিষ্য বাহিনীকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার সময় বলে দেয়, তোমাদের যে কোনো মুসলমানকে পথভ্রষ্ট করতে পারবে, তার মাথায় আমি নিজ হাতে মুকুট পরিয়ে দেব এবং সে আমার কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদাবান বিবেচিত হবে। দিনের শেষভাগে সবাই ফিরে এসে ইবলিসের কাছে তাদের সারা দিনের কৃতকর্মের হিসাব দিতে থাকে। কেউ বলে আমি অমুকের পেছনে লেগে থেকে কুপ্ররোচনার মাধ্যমে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করেছি। ইবলিস বলে- তোমার একাজ তো তেমন কিছুই নয়, সে আর এক রমণীকে বিয়ে করে নেবে। অতঃপর আর একজন বলে-আমি সারা দিন অমুকের পেছনে লেগে থেকে নানা কুপ্ররোচনার মাধ্যমে তার ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ বাধিয়ে দিয়ে এসেছি। ইবলিস বলে- তোমার একাজ তো তেমন কিছুই নয়, অচিরেই তারা পরস্পরে মীমাংসা করে নেবে। অতঃপর আর একজন বলে- আমি সারা দিন কুপ্ররোচনার মাধ্যমে অমুককে ব্যভিচারে লিপ্ত করিয়েছি। ইবলিস এবার খুশি হয়ে বলে- ‘হ্যাঁ, তুমি একটা কাজের কাজ ঘটিয়েছ। অতঃপর ইবলিস তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেয়।’ আল্লাহ আমাদের ইবলিস শয়তান ও তার শিষ্যদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন।

আর এক হাদিসে রসুল (সা.) বলেন, ‘যে লোক মদ পানে অভ্যস্ত অবস্থায় (বিনা তওবায়) মারা যায়, আল্লাহ পাক তাকে গাওতাত নামক নহরের পানি পান করাবেন। গাওতাত হচ্ছে, জাহান্নামে ব্যভিচারিণীদের যোনিপথ থেকে নির্গত দূষিত রক্ত ও পুঁজের প্রবাহমান ঝর্ণাধারা।’ -আহমদ, আবু ইয়ালা, ইবনে হেব্বান, হাকেম। অন্যত্র রসুল (সা.) বলেন- ‘আল্লাহর কাছে শিরক করার পর অবৈধ নারীর গুপ্তাঙ্গে বীর্যপাতের চেয়ে জঘন্য কবিরা গুনাহ আর নেই।’ -আহমদ, তাবারানি।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর