মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণের দৌরাত্ম্য

এখনই লাগাম পরাতে হবে

খেলাপি ঋণের পায়ে লাগাম পরানোর চেষ্টায় সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও সাফল্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। ব্যাংকিং ব্যবস্থার রথী-মহারথীদের কারসাজিতে বাড়ছে ঋণখেলাপি। আইনের কঠোরতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এক ব্যাংকের পরিচালক গ্রহণ করছেন অন্য ব্যাংক থেকে করপোরেট ঋণ। এতে থাকে না নিরাপত্তা গ্যারান্টি, দেওয়া হচ্ছে না ঋণের বিপরীতে জমি, বাড়ি কিংবা অন্য কোনো সম্পত্তির গ্যারান্টি। ফলে ভুয়া মানুষের নামে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার অপকর্ম বেড়েই চলেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে খেলাপির পরিমাণও। আদালতে মামলা গড়ালে আইনের ফাঁক-ফোকর কাজে লাগিয়ে তা স্থগিত করে প্রভাবশালীরা ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে জিম্মি করে ফেলছেন। ফলে খেলাপির পরিমাণ বাড়ছে তো বাড়ছেই। ব্যাংকে যে জামানত থাকে তার মালিক সাধারণ গ্রাহকরা, বড় মাপে দেশের জনগণ। এ অর্থ কাউকে ঋণ হিসেবে দিতে হলে তার বিপরীতে ঋণগ্রহীতা ব্যাংকের কাছে জামানত হিসেবে জমি বা সম্পদ বন্ধক রাখবে এটি নিয়ম। কিন্তু ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশে বা পার্সেন্টেজের বিনিময়ে যারা ঋণ পান তাদের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম প্রযোজ্য হয় না। ব্যাংকে রক্ষিত জনগণের আমানত নিয়ে যা খুশি তাই করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রদত্ত অর্থ ঋণ হিসেবে দিয়ে রাখা হয় না কোনো ধরনের সম্পদ বন্ধক। ভুয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদানেরও অভিযোগ রয়েছে অনেক ব্যাংকের বিরুদ্ধে। বেশির ভাগ অনিয়ম হয় ব্যাংকসংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে। ফলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আদালতে গিয়েও ঋণ আদায়ে সাফল্যের মুখ দেখে না। আইনি দোহাই দিয়ে মামলা স্থগিত রাখা হয়। যে কারণে আদায় হয় না ঋণ। আবার কেউ কেউ পালিয়ে যায় বিদেশে। এতে সত্যিকারের বিনিয়োগকারীরা বঞ্চিত হয়। দেশের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয় বিদেশে। দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকিং ব্যবস্থার ভিত কেঁপে উঠছে। ব্যাংকগুলো প্রকৃত উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে পারছে না অর্থাভাবে। ফলে দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত গতি আসছে না। এ অবস্থার পরিবর্তনে সরকারকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর