বুধবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইংরেজি মাধ্যম স্কুল

যথেচ্ছতা বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন করুন

দেশে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে যথেচ্ছতা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। শিক্ষাকে বাণিজ্য হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্য নিয়েই এ দেশে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব ঘটে। কালক্রমে দেশের জনগোষ্ঠীর এক উল্লেখযোগ্য অংশ এই অতিলোভী শিক্ষা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, কোনো ধরনের নীতিমালা ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর প্রকৃত সংখ্যা কিংবা সিলেবাস সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে ১৫৯টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নিবন্ধন রয়েছে এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৪ হাজার ৫০৭। এর মধ্যে ‘ও’ লেভেলের স্কুল ৬৪টি, ‘এ’ লেভেলের ৫৪টি ও জুনিয়র লেভেলের ৪১টি। তবে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে সারা দেশে এ ধরনের স্কুলের সংখ্যা ৩ শতাধিক। আর শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। জুলাইয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোয় শুরু হয়ে যায় বেতন বাড়ানোর প্রতিযোগিতা। হরেক ফন্দিফিকিরে বাড়ানো হয় বেতন। এ নিয়ে অভিভাবকদের হাজারো অভিযোগ থাকলেও অদৃশ্য কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিয়মনীতির বালাই না থাকায় রাজধানীতে ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে উঠছে ইংরেজি মাধ্যমের একের পর এক স্কুল। ব্রিটিশ কিংবা এডেক্সেলের সিলেবাস অনুসরণ করে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। রাজধানীর নামিদামি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোয় প্লে ও কেজি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি বাবদই লাগে প্রায় দেড় লাখ টাকা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফিও নেওয়া হয় ১৪ হাজার টাকা। শিক্ষার নামে এসব প্রতিষ্ঠানের সত্যিকারের লক্ষ্যটা কী তা ফুটে উঠেছে ভর্তি ও টিউশন ফির বিশাল অঙ্কে। শিক্ষার নামে যে অবাঞ্ছিত বাণিজ্য চলছে তাতে লাগাম পরানোর স্বার্থে অবিলম্বে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর ব্যাপারে নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে নতুন শিক্ষামন্ত্রী উদ্যোগী হবেন- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর