শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ

জাতীয় ঐকমত্যের বিকল্প নেই

একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণদানকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও অব্যাহত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মতো মৌলিক প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে ঐকমত্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থায়ীরূপ পেতে পারে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। আমাদের দৃষ্টি ২০২১ সাল ছাড়িয়ে আরও সামনের দিকে, ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা। সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণে প্রকৃত অর্থ দেশের ১৬ কোটি মানুষের আশা-আকাক্সক্ষাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে জাতীয় ঐকমত্যের কারণে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে অবিস্মরণীয় জয় সম্ভব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ফলশ্রুতিতে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বীভৎস ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও বাঙালি জাতি রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতো ভস্ম থেকে উড়াল দিতে সক্ষম হয়েছে দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং জাতীয় ঐকমত্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ওঠার কারণে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে দেশি-বিদেশি অপশক্তি নানা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিলেও তা ব্যর্থ হয়েছে জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল বলেই। বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে হলে জাতীয় ঐকমত্যের ধারাকে জিইয়ে রাখতে হবে। গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রত্যাশা পূরণেও দেশের সব পক্ষকে যত্নবান হতে হবে। বলা যায়, একবিংশ শতাব্দীতে উন্নয়নের শিখরে উঠতে হলে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেই এগোতে হবে। যে চেতনা আমাদের দেশের মানুষকে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের মন্ত্র হিসেবে কাজ করেছে সে অপরাজেয় চেতনা জিইয়ে রাখতে হবে যে কোনো মূল্যে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর