শিরোনাম
শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নদ-নদীর দখল দূষণ

এই অর্বাচীন আচরণ বন্ধ হোক

নদ-নদী দখল নিয়ে কানামাছি খেলা বন্ধের তাগিদ দিয়েছে হাই কোর্ট। তুরাগ নদ রক্ষায় দায়েরকৃত রিটের ওপর রায় ঘোষণার দিনে গত বুধবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ বলেছে, আজ নদী দখল হচ্ছে, কাল হাই কোর্ট থেকে একটি আদেশ দেওয়া হচ্ছে; কয়েকদিন নিরিবিলি থাকার পর আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে- এই কানামাছি খেলাটা বন্ধ হওয়া উচিত। নদীখেকোদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। রাজধানীর নদ-নদী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে কর্তৃপক্ষীয় উদাসীনতার কারণে। নদ-নদী, খাল-বিল, ঝিল-জলাশয় রক্ষার দায়িত্ব যাদের তাদের নিস্পৃহতায় তুরাগসহ দূষণ-দখলে রাজধানীর চার নদ-নদী বিপন্নপ্রায়। বুড়িগঙ্গার পানি তো স্বাভাবিক চেহারা হারিয়ে আলকাতরার চেহারা ধারণ করতে চলেছে। পানির দুর্গন্ধে নদীপাড়ে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ার উপক্রম হয়। দখল-দূষণে নদীর এক উল্লেখযোগ্য অংশই দখলবাজদের থাবার নিচে। রাজধানীর নদ-নদীগুলো দেড় কোটিরও বেশি নাগরিকের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। ঘিঞ্জি এ জনপদের মধ্যে নদীগুলোই মুক্ত হাওয়ার বড় আধার যা রাজধানীর ফুসফুসের মতো ভূমিকা পালন করছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। দেরিতে হলেও রাজধানীর নদ-নদী, খাল-বিল, ঝিল-জলাশয় রক্ষায় সচেতন হয়ে উঠেছে দুই সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয়। নদ-নদী, জলাশয় রক্ষায় নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা থাকায় সকল পক্ষের সক্রিয়তাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তার পরও রাজধানীর চার নদ-নদীর দখল-দূষণ থামছে না। এ অকাম্য অবস্থার পেছনে নদ-নদী সুরক্ষায় আদালত ও সরকারের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা তাদের গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট। অভিযোগ রয়েছে, তারা দখলকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। দখল-দূষণ রোধে নদ-নদীর তীরে হাঁটাপথ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন থেমে আছে রহস্যজনকভাবে। নদ-নদী রক্ষায় গৃহীত পরিকল্পনাগুলোর সফল বাস্তবায়নে নজর দিতে হবে। নদীতীরে ইট-পাথর ও বালু ব্যবসা বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ। রাজধানীর চার নদ-নদী রক্ষায় জনসচেতনতা গড়ে তোলার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর