সুশাসনের বিষয়টি জাতীয় প্রত্যাশা হয়ে উঠেছে এবং এ বিষয়ে রাষ্ট্র ও সরকারের আগ্রহও ফুটে উঠেছে একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর নীতিনির্ধারকদের বক্তব্যে। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে জনমনে কোনো সন্দেহ নেই। গত দুই মেয়াদে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দৃষ্টিকাড়া সাফল্য ও উন্নয়ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও মহাজোটকে ভূমিধস জাগানো বিজয় এনে দিয়েছে। এ বিজয় সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশাকেও আকাশচুম্বী করে তুলেছে। দেশবাসীর প্রত্যাশা শুধু উন্নয়ন নয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠায়ও সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ ভূমিকা রাখবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত হলো সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। সরকার-প্রধানের উচিত হবে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার তিনি দেশবাসীকে দিয়েছেন তা বাস্তবে পরিণত করতে কার্যকর কর্মপন্থা উদ্ভাবন করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংসদীয় কমিটিগুলো সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশেও সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। দুদকের স্বাধীনভাবে কাজ করার যে স্বাধীনতা রয়েছে তা বাস্তবে পরিণত করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই জনগণ ও সহযোগী সব সংস্থাকে আস্থায় নিয়ে কাজ করতে হবে। জনগণ যদি দুর্নীতি বা অসংগতির বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে দেখতে পায় তাদের কোনো ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে না ও দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে, তাহলে জনগণও এগিয়ে আসবে। এর বাইরে যেসব সংস্থা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের বিষয়ে নানাভাবে সহযোগিতা করে তাদের সহযোগী হিসেবে নিতে হবে। সুশাসনের জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও জরুরি। এ বিষয়ে সরকার তথা প্রশাসনকে সচেতন হতে হবে। কেউই আইনের ঊর্ধে নয়- এ মনোভাবে সবাইকে পরিচালিত হতে হবে। সরকারের জন্য এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি করণীয় কাজ হওয়া উচিত সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন। সরকারের প্রতি দেশবাসীর আস্থা ধরে রাখতেই এ ব্যাপারে যতœবান হতে হবে।