সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিক্ষা খাতের দুর্নীতি

অসৎ কর্মকর্তাদের সামাল দিন

শিক্ষা মানুষকে সুনীতির পথে উদ্বুদ্ধ করে। অন্ধকার থেকে আলোর পথে আসার পথ দেখায়। দুর্নীতির অবস্থান সুনীতির বিপরীতে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্নীতিই বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আমাদের এ দেশে শিক্ষা ও দুর্নীতি বহু ক্ষেত্রে একাকার হয়ে পড়েছে। শিক্ষা খাতের এমন দিক নেই যেখানে দুর্নীতির নোংরা শকুন থাবা বিস্তার করেনি। দুর্নীতির মতোই আরও একটি বিষয় শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করছে। সেটি হলো সন্ত্রাস। শিক্ষার সঙ্গে সন্ত্রাসের দূরতম কোনো সম্পর্ক না থাকলেও সন্ত্রাসী নামের ঘৃণ্য জীবরা শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশে দূষণ ঘটাচ্ছে। বলা হয়, শিক্ষার ঘাটে ঘাটে দুর্নীতি, সরকারি প্রকল্পের টাকা লুটপাটের ক্ষেত্রে শিক্ষা খাত সব দফতরকে ছাড়িয়ে গেছে। থানা শিক্ষা অফিস থেকে শুরু করে আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, শিক্ষা ভবন এমনকি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগে রয়েছে ঘুষের রাজত্ব। স্কুলে ছাত্র ভর্তি, শিক্ষক নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, শিক্ষকের এমপিওভুক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন, জাতীয়করণসহ অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের পেনশনের টাকা তুলতেও ঘুষ দিতে হয়। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, মেরামত, আসবাবপত্র ও শিক্ষা সরঞ্জাম কেনাকাটা ও সরবরাহের প্রতিটি ধাপেই চলে সীমাহীন চাঁদাবাজি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগে চলে সরকারি অর্থের যথেচ্ছ অপচয় আর লুটপাট। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর-মাউশি তথা শিক্ষা ভবন অনিয়ম, দুর্নীতি আর ঘুষ বাণিজ্যের প্রধান আখড়ায় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা অধিদফতরে ঘাপটি মেরে থাকা দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট নানা পর্যায়ের দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত জরুরি কাজে সারা দেশ থেকে আসা লোকজনকে বেকায়দায় ফেলে যেভাবে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া হয় তা কেবল ভুক্তভোগীদের পক্ষেই উপলব্ধি করা সম্ভব। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি থাবা বিস্তার করায় শিক্ষা খাতের জন্য সরকারি বরাদ্দের এক বড় অংশ অপচয় হচ্ছে।  শিক্ষার মাধুর্যই নষ্ট হচ্ছে দুর্নীতির সংশ্রবে। যার অবসানে সরকারকে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে।  শিক্ষা ভবনসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দফতরের অসৎ কর্মকর্তাদের সামাল দেওয়া তথা দুর্নীতিবাজদের থাবা ঠেকাতে নিতে হবে সর্বাত্মক ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর